
সানশাইন ডেস্ক : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। আমাদের স্বাধীনতা ১০ জানুয়ারি পূর্ণতা পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করলেও বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়নি। আর সেই দিনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা মানে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে তারা যে বিশ্বাস করে না, সেটিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির এই কর্মসূচি ঘোষণা করা মানে তারা যে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে আদৌ কতটুকু বিশ্বাস করে, সেটি নিয়ে যেমন জনগণের প্রশ্ন আছে, সেই প্রশ্নের উত্তর তারা দিয়ে দিয়েছে ১০ জানুয়ারি বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি অন্যদিন করতে পারতো। তারা ৯ জানুয়ারি বা ১১ জানুয়ারি করতে পারতো।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিক্ষোভ কর্মসূচির সঙ্গে তাদের যে জোটসঙ্গী জামায়াত ইসলামী আছে, যারা বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বিরোধিতা করেছিল দলগতভাবে। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল, অর্থাৎ পাকিস্তানের পক্ষে লড়াই করেছিল। তাদের সঙ্গে নিয়ে ১০ জানুয়ারি বিক্ষোভ করা মানে তারা যে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, যেটি জনগণ বলে, সেটি তারা সত্য বলে স্বীকার করে নিলো।’
বিএনপি মহাসচিবের এক মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৃহত্তর ঐক্য তারা গত নির্বাচনের আগেও করেছিল। ডান, বাম, অতি বাম, অতি ডান, প্রতিক্রিয়াশীল এবং ধর্মান্ধ গোষ্ঠী সবাইকে নিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা সরকারের বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছিল। দেখা গেলো, সেই ঐক্য কাচের গ্লাসের মতো ভেঙে গেছে। যে দলগুলো একত্রিত হয়েছিল, সেই দলগুলোর অভ্যন্তরীণ ঐক্য নেই এবং বিএনপির ভেতরেও ঐক্য নেই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাবো, অতীতেও তারা বৃহত্তর আন্দোলন করেছে, কিন্তু তাতে তারা ফল পাননি। তাই নিজের দলের ঐক্যটাকে ধরে রাখার চেষ্টা করাই শ্রেয়। কারণ, তাদের দলের মধ্যে দলীয় নেতারা যেভাবে বক্তব্য রাখছেন, একে অপরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করছেন এবং সামনের সারিতে বসা নিয়ে তারা মারামারি করেছেন রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়, তাতে তাদের দলের যে অনৈক্য তা বেরিয়ে এসেছে। প্রথমে দলে ঐক্য তৈরি করা জরুরি।’
মির্জা আবদুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রথমত মির্জা কাদের যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটির ব্যাখ্যা তিনি ইতোমধ্যে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি নোয়াখালীর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন। সারাদেশের রাজনীতি নিয়ে তিনি কোনও কথা বলেননি। তিনি বিবৃতি দিয়ে এটা জানিয়েছেন। মির্জা কাদেরের বক্তব্যে আমি মনে করি যে, আমাদের দলের মধ্যে যে গণতন্ত্র আছে, যে কেউ তার অভিমত ব্যক্ত করতে পারেন, সেটারই বহিঃপ্রকাশ। সুতরাং, এটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যেটা হচ্ছে, সেটার ব্যাখ্যা তিনি যেমন দিয়েছেন, একইসঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে যে কেউ অভিমত ব্যক্ত করতে পারেন। এরকম অভিমত আমাদের দলের মধ্যে বহুজন বহু আগে ব্যক্ত করেছেন। তিনি যেহেতু আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই, সেজন্য তারটা বেশি প্রচার হয়েছে। এটিই শুধু ভিন্নতা।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার ধূম্রজাল সৃষ্টি করছে’- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছিল একটি ভুল সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে। সেটি নিরসনে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও স্বাস্থ্য সচিব বক্তব্য দিয়েছেন। এরপরও যারা এসব কথা বলে, আসলে তারা জনগণের মনে প্রথম থেকে যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিল, সেটার ধারাবাহিকতায় রিজভী আহমেদসহ বিএনপির নেতার এসব কথা বলছেন। বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে ভ্যাকসিন পাবে।
সানশাইন/০৭ জানুয়ারি/রনি