
সানশাইন ডেস্ক: দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমকে হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আগামী ৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঞ্জুমান আরার আদালতে উপস্থাপন কা হয়।
মামলায় জামিনে থাকা ৪ আসামি আসাদুল হক, নবিউল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম পলাশ ও সান্টু রবি দাস এবং কারাগারে আটক রবিউল ইসলামকে আদালতে হাজির করা হয়।
বিচারক পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করেন এবং অভিযোগপত্র বিষয় কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর মজিদের কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চান।
আগামী ৪ জানুয়ারি ৪ আসামিকে অব্যাহতির আবেদনের বিষয় ও পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে গতকাল রবিবার (২২ নভেম্বর) এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. ইমাম জাফর আসামি রবিউলকে অভিযুক্ত করে আদালত অভিযোগপত্র পেশ করেন। মামলায় গ্রেফতার অপর ৪ আসামিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে গেল ২০ সেপ্টেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের আদালতে রবিউলকে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানিতে আদালতের কাছে হামলার দায় স্বীকার করেন।
এর আগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানিয়েছিলেন, এ ঘটনার একমাত্র পরিকল্পনাকারী এবং হামলাকারী তিনি নিজেই। আক্রোশ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তিনি। তার দেয়া তথ্যমতে হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়ি, লাঠি, মই, চাবিসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে তার পরনের প্যান্ট, হাতের ছাপসহ মোবাইলের লোকেশন- বিষয়গুলো আলামত হিসেবে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এসব আলামত বিচারকার্যে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ৯ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন ও প্রযুক্তির সহায়তার রবিউল ইসলামকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা মই বেয়ে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসায় ঢুকে এবং ভেন্টিলেটর ভেঙে ইউএনওর রুমে প্রবেশ করে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত শুরু করে। একসময় ইউএনও’র চিৎকার শুনে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা পাশের রুম থেকে ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে পাশের কোয়ার্টারের বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় ওই রাতেই প্রথমে ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরদিন সকালে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর ওয়াহিদাকে ঢাকায় এনে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতেই প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল ইউএনও ওয়াহিদার মাথার জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।
একই সময়ে হামলার শিকার ওয়াহিদা খানমের মুক্তিযোদ্ধা বাবা ওমর আলী শেখকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সানশাইন/২৩ নভেম্বর/রনি