ই-পেপার

তিস্তা পাড়ে মানুষের মুখে মুখে পানির ন্যায্য হিস্যার স্লোগান

সানশাইন ডেস্ক: ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে মুখরিত হয়েছে তিস্তা পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। হাজার হাজার মানুষ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অংশ নিতে এসে এই স্লোগান তুলেছেন।
সোমবার সকাল থেকে রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলের ১১টি স্থানে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে একযোগে এই কর্মসূচি চলছে। এ ছাড়া তিস্তার ২৪২ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পদযাত্রা। দুই দিনব্যাপী কর্মসূচিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরাও যুক্ত হয়েছেন।
‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের’ ব্যানারে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচির মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতু এবং তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তাঁবু খাঁটিয়ে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। সকাল থেকেই ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে প্রকম্পিত তিস্তার দুই তীর। শুকিয়ে যাওয়া তিস্তায় জেগে ওঠা চরে জড়ো হয়েছেন উত্তরবঙ্গের হাজারো মানুষ। কেউ হেঁটে, কেউবা নৌপথে এসে মিছিলে যোগ দিচ্ছেন। তিস্তা ব্রিজের নিচে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদ সমাবেশ।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারত উজানে বাঁধ নির্মাণ করায় তিস্তার পানির প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, আর এর ফলে বাংলাদেশের কৃষি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তারা দাবি করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পেয়ে হাজার হাজার কৃষক ও সাধারণ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এই প্রতিবাদে সম্পৃক্ত মানুষের অভিযোগ, ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে লাখ লাখ মানুষকে দুর্দশার মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তারা বলছেন, ভারতের আগ্রাসন রুখতে এখনই আমাদের সোচ্চার হতে হবে, নইলে ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
আন্দোলনে আসা রফিজ উদ্দিন (৬০) বলেন, “শুকনা মৌসুমে আমরা ন্যায্য পানি পাচ্ছি না। আমাদের ন্যায্য পানি আমাদের দেওয়া হয় না। আমরা আমাদের হিসাব বুঝে নিতে চাই।” আন্দোলনে আসা আবু বক্কর মিয়া (৫৬) বলেন, “যখন আমাদের পানির প্রয়োজন নাই, তখন ইন্ডিয়া হামাক পানি দিয়ে প্লাবিত করে দেয়। আর যখন দরকার হয়, তখন আমাদের দেয় না।” আন্দোলনে আসা মাহফুজার রহমান বলেন, “আন্দোলন করার একটাই উদ্দেশ্য, আমাদের পানির দরকার। আমারা পানি চাই।”


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫ | সময়: ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ