শুক্রবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে জমি দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ভূক্তবোগী পরিবার। সোমবার বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন রাজশাহী শাখা কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বড়বনগ্রাম কুচপাড়া এলাকার মৃত মুসলেম উদ্দিন এর ছেলে ভুক্তভোগী জুলহাস উদ্দিন জানান, তার বাবা মৃত মুসলেম উদ্দিন দলিল মোতাবেক ১৯৭৮ সালে মৌজা নং-৮২, খতিয়ান নং-১, আরএস-১, সাবেক দাগ-৩০১৭, হাল দাগ-৩৬৯০ সরকার কর্তৃক এককালীন লিজ হিসেবে ১০৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে। জমিটি ক্রয় করার পর যাবতীয় খাজনা খারিজ ২০০০ সাল পর্যন্ত বাবার নামে পরিশোধ করা হয়। বাবা মারা যাবার পর উত্তরাধিকার সূত্রে জমিটি ৩ ভাই ও ২ বোনের সম্মতিক্রমে তিনি ৪০ শতক জমিতে বাঁশবাগান এবং বাকী গুলো ফসলি জমি হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। জমি থেকে যা আয় হয় তার তারা পাঁচ ভাই বোন সমান ভাবে ব্যবহার করেন এবং এর থেকেই তাদের প্রতিটি সংসার চলে।
গত ৫ই আগষ্ট আওামী ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের ২০ তারিখ তার মোবাইল নম্বরে পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বপরিচিত আমজাদ ও তার ভাই আজাদ ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেন। এরপর জিয়া পার্কের পাশে একটি দলিয় কার্যালয়ে তাকে নিয়ে গিয়ে জমি থেকে গাছ, বাঁশ ও ফসল কেটে ফেলতে বলে। অন্যথায় এর ব্যাত্যয় ঘটলে তার ও তার পরিবারের ক্ষতি হবে এমন হুমকি প্রদান করে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের কথা মতো জমিটি থেকে আমাদের দখলমুক্ত করারা আল্টিমেটাম দেয়।
আমি বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ না নিলে তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সহ তার জমিতে গিয়ে সকল গাছ কেটে দেয়। তারা শুধু জমি দখল করেননি জমিতে থাকা আনুমানিক ৯ থেকে ১০ লাখ টাকার বাঁশ, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের গাছ কেটে ফেলে। ২২ তারিখ এঘটনা শোনার পর তিন ২৩ তারিখ রাজশাহী শাহ মুখদুম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তবে, থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা অভিযোগটির বিষয়ে অন্যকোথাও সাহায্য নিতে বলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। এরপর তিনি রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং- ১১৩১। এঘটনায় ২৪ তারিখ কোট ১৪৫ ধারা বলবৎ করে জমিটির উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেও জমিতে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। পরে লোক মারফত জানতে পারেন জমিটি প্লট আকারে বিক্রির প্রস্তুতি চলছে এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে একধিক মানুষের কাছে বিক্রিও করেছে তারা।
এঘটনায় তিনি ও তার পরিবার আতংকিত এবং অসহায়ত্বের মধ্যে পড়েছেন। এমন পরিস্তিতিতে আইন আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে তিনি ক্লান্ত। তিনি কোথাও ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না। তার বাবার জমির সকল দলিলি প্রমান থাকার পরও তিনি প্রতারণা ও সন্ত্রাসের শিকার। বৈষম্যহীন এই রাষ্ট্র নির্মানে তিনি ও তার পরিবার সম্মুখে থেকে আন্দোলনে কাজ করেছেন। কিন্তু আজ তিনি ও তার পরিবার এখন বৈষম্যের শিকার। তার জমি রক্ষার্থে দেশবাসী ও বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টাদের নিকট আকুল আবেদন জানান তিনি। এ সময়ে তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।