ই-পেপার

অহংকারের একুশে

সানশাইন ডেস্ক : বাঙালির ন্যায্য অধিকার আদায় ও মহান স্বাধীনতার বীজ বপনের প্রশ্নেÑ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন সবচেয়ে বেশি অম্লান এবং অবিস্মরণীয়। হাজার বছরের ঐতিহ্যলালিত আমাদের মাতৃভাষা, আমাদের মুখের ভাষা, যে ভাষায় কথা বলি, মনের ভাব প্রকাশ করি, যে ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। ১৯৪৮ সালের ২০ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আগমন করে ২১ মার্চ বিশাল জনসভায় ঘোষণা দেন, ‘উর্দু এবং উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’Ñএই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে খাজা নাজিমুদ্দীন আবার ঘোষণা দিলেনÑ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ জানায়। আন্দোলন ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শহরের সর্বস্তরের বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্রসমাজ কর্তৃক সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হলো। সর্বদলীয় কর্মপরিষদ ২১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিল। এদিন সকাল ১০টায় গাজীউল হকের সভাপতিত্বে সভাশেষে ছাত্র-জনতা আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল স্লোগানে ঢাকার রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলে। পুলিশ প্রথমে গণ প্রেপ্তার শুরু করে। পরে আন্দোলনের তীব্রতা দেখে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি চালায়। বুলেটের আঘাতে অনেকে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষা বাংলার অধিকার ফিরে পাই।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫ | সময়: ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ