ই-পেপার

তাহেরপুরে মন্দিরের অদূরে নতুন মন্দির স্থাপন নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার রিভার ভিউ স্কুলের সামনে সরকারের ভিপি সম্পত্তি নিয়ে লিজ গ্রহিতাদের সাথে নতুন করে মন্দির স্থাপনকে কেন্দ্র করে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে একটি কুচক্রিমহল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
তবে বিষয়টি প্রশাসনের লোকজন গিয়ে উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে উভয়কে নিবৃত্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। এছাড়া পাশে মন্দিরের ৩০ গজের মধ্যে নতুন করে আরো একটি মন্দির তৈরি নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, উপজেলার তাহেরপুর এলাকা এক সময়ে রাজা কংস নারায়ন প্রদেশিক কেন্দ্রস্থল ছিল। ওই এলাকায় কয়েক হাজার জমি সরকারের ভিপি সম্পত্তি রয়েছে। এতে করে কিছু কিছু জমি সরকারী ভাবে স্থানীয়রা শত বছরের জন্য লিজ নিয়ে দখলে রয়েছেন। এই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় কাশেম আলী ১৯৬৭ সালে লিজ নিয়ে স্কুলের সামনে নদীর অদূরে ভোগ দখল করতে থাকেন।
বিশেষ কারণে তিনি বাড়ি সহ জমিটি স্কুল মাষ্টার দেলুয়ার হোসেনের কাছে ১৬ শতক জমি বাড়ি সহ ২০০৭ সাল সাব লিজ দিয়ে দেন। সেই থেকে বাড়ি সহ লিজ গ্রহীতা মাষ্টার দেলুয়ার হোসেনের মধ্যে রয়ে যায়। কিন্তু ২০১৪ সালে ওই ভিপি সম্পতির একটি অংশ মাষ্টার দেলুয়ার হিন্দুদের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে একটি ভুয়া কাগজ করে নেয় স্বার্থন্মেষী তোতা ও মোহনের সহায়তায়। এই দাবিতে কয়েক দফা জমি দখলে নামলে তারা প্রতিরোধের মুখে পড়ে ভিড়তে পারেনি। দেলুয়ার হোসেন ১৬ শতাংশ জমি বিধি মোতাকে সাব লিজ নিয়ে বাসাবাড়ি করে জমি দখলে রাখেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ ওই জমি হাতাতে না পেরে মন্দির বানানোর একটি কৌশল আঁটে।
গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোকজন তার দখলীয় জমি ঘেঁষে নতুন করে মন্দির নির্মাণ করতে চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হতে থাকে। পরে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করে। তবে উত্তেজিত হিন্দু সম্প্রদায়ের কতকজন কিছুতেই মানতে চাইছিল না। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হলে তিনি বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সন্ধ্যা পর্যন্ত উভয়ের কাগজপত্রাদি দেখেন এবং উভয়ের সাথে কথা বলেন। পরে তাদের কে বিষয়েটি বুঝিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে আগামী ২-৪ দিনের মধ্যে সকল কাগজপত্রাদি নিয়ে হাজির হতে বলেন। নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন পক্ষেই ওই জমি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।
এই সময় স্থানীয় কমিশনার সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোক মন্দির করতে উদ্যোগেী হয়েছেন। অথচ সেখানে দেলুয়ার মাষ্টারের জমির ৩০ গজ দুরে একটি মন্দির রয়েছে। সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিনা বাধায় তাদের আরাধনা করতে কোন বাধা নেই। অথচ সামান্যতম দূরত্বে নতুন করে মন্দির গড়ার বিষয়টি রহস্যজনক মনে করেছন এলাকার সচেতন মহল।
মাষ্টার দেলুয়ার জানান, তার লিজকৃত জমি নিয়ম অনুযায়ী সরকারের নিকট হতে নেয়া। অথচ তারা আমার জমির অংশ তাদের বলে আমার নামীয় স্বাক্ষর জাল কাগজ করে জমির দাবি করছে। তবে হিন্দুদের দাবি ওই সম্পত্তি তিনি মন্দিরের জন্য দিয়েছেন। এখন দখল দিচ্ছেন না। এ নিয়ে কয়েক দফা সালিশ দরবার হয়েছে। তাদের পক্ষে রায় রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ওই সম্পত্তি গুলোর মালিক সরকার। ভিপি সম্পত্তির উপর মালিকানা দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির ঘটনায় বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শ করা হয়েছে। উভয় পক্ষের কাগজপত্রাদি দেখা হয়। তবে বিষটির মধ্যে জটিলতা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে দ্রুত দিন নির্ধারণ করা হবে। সাময়িক ভাবে দুই পক্ষকে শান্ত করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন বলে জানান।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫ | সময়: ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর