মঙ্গলবার, ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগে চার মাস ক্লাস করার পর এক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সন্দেহ হলে তারা বিভাগের সভাপতিকে জানান বিষয়টি। পরে তাকে প্রক্টর দপ্তরের মাধ্যমে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওই ভুয়া শিক্ষার্থীর নাম নাভিক রহমান। তিনি ছদ্মবেশে আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে ক্লাস করছিলেন এতোদিন। পাশাপাশি, খেলাধুলা ও জাতীয় দিবস উদযাপনসহ বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে নাভিক রহমান দাবি করেছেন, তার মায়ের অনেক আশা ছিল যে, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাননি। তাই, মাকে খুশি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিনয় করেছেন এতোদিন।
নাভিক রহমানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘুরে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টে নিজেকে রাবি আইন বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রোফাইল পিকচারে আইন বিভাগ লেখা একটা টি-শার্ট পরিহিত ছবি রয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টে আইন বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি। তার ফ্রেন্ডলিস্টেও আইন বিভাগের অনেকে যুক্ত রয়েছেন।
আইন বিভাগের ৪৩ ব্যাচের (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) শ্রেনী প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান মেহেদী বলেন, আমাদের ক্লাস শুরু হওয়ার প্রথম দিকে ১ মাস মত রোল কল করা হতো না। ওইসময় নাভিককে নিয়মিত ক্লাস করতে দেখেছি। পরে রোল কল শুরু হলে তাঁকে খুব একটা নিয়মিত দেখা যেতো না। তবে, বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সে অংশগ্রহণ করতো নিয়মিত। আমাদের ১ম সেমিস্টার পরীক্ষায় তাকে উপস্থিত হতে না দেখে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারি যে, তার নাম আমাদের শিক্ষার্থীদের তালিকায় নেই।
এই ব্যাপারে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাঈদা আঞ্জু বলেন, তাকে বেশ রাতে আটক করা হয়েছে। আমি স্বশরীরে উপস্থিত হতে পারিনি ওইসময়। প্রক্টর স্যারের সঙ্গে শুধু অল্প একটু কথা হয়েছিল। আজ প্রক্টর স্যারের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলার পরে এবিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো। এটুকু জেনেছি যে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই না। তাই, সে আদৌ ক্লাস করেছে কিনা, সেটা সংশ্লিষ্ট ব্যাচের শিক্ষার্থীরাই ভালো বলতে পারবে।
রাবির প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ছেলেটি স্বীকার করেছে যে, তার মায়ের অনেক আশা ছিল, তার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পায়নি। তাই, মাকে খুশী করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অভিনয় করেছে এতোদিন। তাকে থানায় হস্তান্তর করেছি। পুলিশ অধিকতর তদন্ত করে দেখবে বিষয়টি।
সানশাইন/ নাজমুল /শামি