বৃহস্পতিবার, ২৭শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: রাজশাহীর বাঘায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদনিয়ে উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে রক্তক্ষয়ী সংঘষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১০ জন। এদের মধ্যে দুজনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রামেক হাসপাতালে রেফার্ট করা হয়েছে। এরা হলেন বিএনপি নেতা মানিক (৪৫) ও রফিকুল ইসলাম (৩৮)।
রবিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের আড়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ স্কুলের বেশ কিছু চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে বলে নিশ্চিত করেন প্রধান শিক্ষক আজিবুর রহমান।
স্থানীয় একধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আড়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সভাপতি পদের জন্য লিখিত ভাবে প্রধান শিক্ষক আজিবর রহমান বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রয়াত ইউপি সদস্য আবুল হোসেন ফোনার সন্তান এবং উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য প্রভাষক পলাশ আহাম্মেদ (৫০) প্রধান শিক্ষকের নিকট একটি আবেদন জমা দিয়েছেন।
অপর দিকে বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনের প্যানেল থেকে আবদন জমা দেন প্রভাষক ওয়ালিউর রহমান বিকুল (৫০)। এ নিয়ে রবিবার সকাল ১১ টার দিকে উভয় গ্রুপের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সেটি সংঘর্ষে রুপ নেয়। এই সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের মোট ১০ জন আহত হন।
এদের মধ্যে রয়েছেন তেথুলিয়া গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে জাফর হোসেন (৪০), আড়পাড়া গ্রামের গাজিউর রহমানের ছেলে বাবুল হোসেন (৩৮), একই এলঅকার মানিক হোসেনের ছেলে রোহান হোসেন (২৩), মুনসাদ আলীর ছেলে মানিক হোসেন (৪৫), মকবুল হোসেনের ছেলে লিখন হোসেন (২২), হেদাতিপাড়া গ্রামের তফের আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৮), আবুল হোসেনের ছেলে এনামুল হক (৩৬), মাঝপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে রানা হোসেন (১৮)। বাঁকি দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এদের মধ্যে মানিক (৪৫) ও রফিকুল ইসলাম (৩৮) কে উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। যার সত্যতা নিশ্চিত করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সিয়াম হোসেন।
এ বিষয়ে সভাপতি প্রার্থী প্রভাষক আনোয়ার হোসেন পলাশ ও প্রভাষক ওয়ালিউর রহমান বিকুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা একে অপরকে দোষারোপ করে কথা বলেন। তবে বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চারঘাট-বাঘায় এই মুহুর্তে বিএনপির দুটি গ্রুপ রয়েছে।
যারা পৃথক-পৃথক ভাবে সভা-সমাবেশ করছেন। এরমধ্যে এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ। অপর পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা যুবদলের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জল। এখানে যে সংঘাত হয়েছে, সেটিও দুই পক্ষে মধ্যে বিরাজমান।
আড়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিবুর রহমান বলেন, উভয় প্রার্থীর বাড়ি আড়পাড়া গ্রামে। তারা দুজনই বিএনপির রাজনীতি করেন। তারা সভাপতি পদের জন্য আমার কাছে আবেদন করেছেন। যাছাই-বাছাই করে যাকে দিয়ে প্রতিষ্ঠান ভালভাবে পরিচালিত হবে, তাকে সভাপতি নির্বাচন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আমার এমটি কথা হয়েছিল। কিন্তু আজ দুই পক্ষ সংঘাত সৃষ্টি করে বিদ্যালয়ের বেশকিছু চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করেছে।
এ বিষয়ে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ.ফ.ম আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে রবিবার বিকেল পর্যন্ত কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।