ই-পেপার

অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা তৈরি স্মৃতিসৌধ

স্টাফ রিপোর্টার :

অযত্ন- অবহেলায় পড়ে আছে রাজশাহী পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর সরকারি কলেজের স্মৃতিসৌধ । কলেজ মাঠের দক্ষিণ পাশে স্মৃতিসৌধ অবস্থিত। মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে শহীদের স্মৃতির স্মরণে নির্মিত এই স্মৃতিসৌধ। আওয়ামী লীগ শাসন আমলে স্মৃতিসৌধ দলীয় বিভাজনের কারণে ব্যবহৃত না করার কারণে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

 

স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন বিএনপির সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা। পুঠিয়া উপজেলায় দুটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন তিনি। একটি হল পুঠিয়া উপজেলা চত্বরে এবং অন্যটি বানেশ্বর সরকারি কলেজে ।

 

গত ৫ আগস্টে আওয়ামী সরকার পতনের পরে পুঠিয়া উপজেলা চত্বরের স্মৃতিসৌধ পরিষ্কারের মুখ দেখলেও বানেশ্বর সরকারি কলেজের স্মৃতিসৌধ নাম মাত্রই পরিষ্কার করা হয়। এখনো অপরিষ্কার ও ময়লার ভাগাড়ের সঙ্গে রয়েছে স্মৃতিসৌধ। কোথাও ফাটল ধরেছে কোথাও টাইলস ভেঙ্গে গেছে।

স্থানীয় আকবর হোসেন জানান, বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা বানেশ্বর সরকারি কলেজের স্মৃতিসৌধটির ভিত্তি প্রস্তর কাজের উদ্বোধন করেন। যার কারনে দীর্ঘ সময় অবহেলা এবং অযত্নে ছিলো এই স্মৃতিসৌধটি।

 

সেই সাথে সীমানা প্রাচীর না থাকায় অবাধে লোকজন জুতা স্যান্ডেল পড়েই স্মৃতিসৌধে ঢুকে পড়ে। এছাড়াও আমাদের দেখা এই স্থানটিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে কোনো একটি অনুষ্ঠান হয় না যে মানুষ এটার মর্যাদা বুঝতে পারবে । সন্ধ্যা থেকে রাতের বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। এতে করে স্মৃতিসৌধের পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অসম্মানও হচ্ছে।

নাম গোপন করে রাখা শর্তে বানেশ্বর কলেজের এক প্রভাষক বলেন, সারা বছর ধরে অযত্নে পড়ে থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই। বানেশ্বর সরকারি কলেজের স্মৃতিসৌধ হলেও এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ উদাসীনতার পরিচয় দেয়। এটি সংরক্ষন ও পবিত্রতা রক্ষার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগই চোখে পড়েনি।

 

গত শনিবার সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় , দলীয় বিভাজনের কারণেই যে স্মৃতিসৌধটা অরক্ষিত ছিল দীর্ঘ সময় বর্তমানেও তা নাম মাত্র পরিষ্কার হয়েও আগের মতই অপরিষ্কার ও মাদক সেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হচ্ছে। স্মৃতিসৌধের আশেপাশের বাতাসে গাঁজার গন্ধ ও স্মৃতিসৌধের উপরে সিগারেটের ফিল্ডারে ভরে আছে।

 

এ বিষয়ে সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফার ছেলে জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময় বলেন, স্মৃতিসৌধটির এমন বেহাল দশা আমার এটা জানা ছিল না। বিগত ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়েও নোংরা রাজনীতি করে গেছে। যার কারণে স্মৃতিসৌধের এমন অবস্থায় পরিণত হয়েছে। আমি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সংস্কারের কাজ করব।

এ বিষয়ে বানেশ্বর সরকারি কলেজ প্রিন্সিপাল জানান, স্মৃতিসৌধটি দীর্ঘদিন অবহেলা অযত্নে পড়েছিল গত ৫ আগস্টের পর আমি স্মৃতিসৌধটি পরিষ্কার করি এবং গত ১৬ই ডিসেম্বরে আমি সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। আমি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই একটি বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি করব এবং বিভিন্ন রকমের ফুল গাছ লাগিয়ে স্মৃতিসৌধ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করব।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,কে, এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, বানেশ্বর কলেজের স্মৃতিসৌধের এমন খারাপ অবস্থা হয়ে আছে আমার জানা ছিল না। মাত্রই আপনার কাছ থেকে জানলাম। সাধারণ মানুষ যাতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে সে বিষয়ে খেয়াল রেখে যে ধরনের সংস্কার করার দরকার তা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে করা হবে।

সানশাইন /রকি/শামি


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪ | সময়: ৫:৩৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine