সর্বশেষ সংবাদ :

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আগামীকাল পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে লাল কার্ড দেখানো কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় এই কর্মসূচি শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্ত্বর থেকে শুরু করে বিভিন্ন আবাসিক হল ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে পুনরায় জোহা চত্ত্বরে এসে বক্তব্য প্রদান করে কর্মসূচি শেষ করেন।
বৈষম্য বিরোধী বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেশকাত মিশু এই কোটাকে তেলা মাথায় তেল দেওয়ার একটা আয়োজন বলে মন্তব্য করে বলেন, কোটা ইস্যু বাংলাদেশে একটি মিমাংসিত ইস্যু। নতুন করে সেই পতিত কোটাকে যারা আবার জীবন দিতে চাচ্ছে, তাদেরকে আমরা লাল কার্ড দেখিয়ে দিচ্ছি। হাসিনা যেভাবে পালাতে বাধ্য হয়েছে, পোষ্য কোটাধারীদেরকেও আমরা বাংলার জমিন থেকে উৎখাত করে ছাড়বো। পোষ্য কোটা সুবিধা বঞ্চিতদের দেওয়ার মতো কিছু না, এটা সরাসরি তেলা মাথায় তেল দেওয়ার একটা আয়োজন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঠিক করার যে আয়োজন হাতে নিয়েছি, সেখানে পোষ্য কোটা নামের কোনো কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে চলবে না। এখানে আপনাকে শিক্ষক হতে হলে মেধার পরিচয় দিয়ে আসতে হবে।
সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করার পরও আমাদের সাথে বাবার কোটার ক্ষমতা দেখানো হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো প্রকার বৈষম্যমূলক পোষ্য কোটা থাকবে না। হয় স্থিতিশীল বাংলাদেশ থাকবে নয়তো পোষ্য কোটা থাকবে। পোষ্য কোটা ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ একসাথে থাকতে পারে না।জুলাই বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ছিলো কোটার যৌক্তিক সংস্কার, আমরা শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা নয়,সকল প্রকার কোটার অবসান চেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, এখনো পোষ্য কোটা বহাল থাকায় জুলাই বিপ্লবের চূড়ান্ত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয় নি। সকল কোটা হারাম পোষ্য কোটা আরাম তা হবে না। অন্য কোটা অবসান চান কিন্তু নিজেদের বেলায় কেনো না। পোষ্য কোটার রচনা রাজশাহী থেকেই শেষ হবে।
এ সময়ে শিক্ষার্থীদের ‘পোষ্য কোটা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তিপাক’, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’, ‘সারা বাংলায় খবর দে,পোষ্য কোটার খবর দে’, ‘হলে হলে খবর দে, পোষ্য কোটার খবর দে’, ‘আবু সাইদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘আলী রায়হান-মুগ্ধ,শেষ হয়নি যুদ্ধ, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দিবো রক্ত’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম’, ‘দালালি না মৃত্যু, মৃত্যু-মৃত্যু’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়।
শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে আইন বিভাগের অধ্যাপক মোরশেদদুল ইসলাম পিটার বলেন, আমরা দেখছি যারা পাশ করেনা;৪০ পাওয়ার যোগ্যতা রাখেনা,যারা ৩৭ পেয়েছে,২০ পেয়েছে, ১৩ পেয়েছে যাদের ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের টিচার হিসাবে নিয়োগ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুদণ্ডটা ধ্বংস করা হয়েছে।এই অযোগ্য ছাত্রদের ভর্তি বন্ধ করার জন্য যা কিছু করা লাগে আমি তোমাদের সাথে আছি।
এর আগে, পোষ্য কোটা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শংতাশ করা হলে গত ১৪ নভেম্বর পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছিলেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙ্গা হয় এবং কমিটি গঠন করা হয়।তবে কমিটি গঠনের পর এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের এক হাজারের মতো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৪ | সময়: ৮:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ