রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
নুরুজ্জামান, বাঘা:
খাবারের স্বাদ বাড়াতে টমেটোর জুড়ি মেলা ভার। এ কারনে এর চাহিদা দিন-দিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি বাঘায় মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চলেছেন নজরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষিত যুবক। মালচিং হলো এক ধরনের পলিথিন। তার দেখা-দেখি এখন অনেকেই টমেটো চাষের স্বপ্ন দেখছেন।
বাঘা উপজেলার আড়ানী হামিদ কুমড়া গ্রামের তরুন যুবক নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় খণ্ডকালীন একটি ট্রেনিং করে বাড়ির সাথে মাত্র পাঁচকাঠা পতিত জমিতে বেড প্রস্তুত করে চলতি বছরের জুলাই এর শেষে চারা রোপণ করে মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ শুরু করেছি। বর্তমানে আমার তৈরী বাগানে প্রতিটা গাছে বিপুল পরিমান টমেটো ধরে আছে। যা অনেকেই দেখতে আসছেন। আমি ইতোমধ্যে প্রায় দশমন টমেটো বাজারে বিক্রী করেছি।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মালচিং হলো এক ধরনের পলিথিন। যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। রোগজীবাণু থেকেও গাছকে রক্ষা করে। অতিরিক্ত পানি রোধ করে। গাছের গোড়ায় আগাছা হয় না। এই পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করতে হলে প্রথমে জমি তৈরি করে মাটির সঙ্গে প্রয়োজন মতো সার মিশিয়ে নিয়ে বেড তৈরি করতে হয়। বেডের প্রস্থ হবে এক মিটার। এক বেড থেকে আরেক বেডের দূরত্ব হবে ৩০ সেন্টিমিটার। এরপর জমিতে তৈরি করা সবকটি বেড মালচিং পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পলিথিনের নিচে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে তাই বেডের চারপাশে পলিথিনের উপরে ভালোভাবে মাটিচাপা দিতে হবে। বেডে চারা রোপণের জন্য ১৮ ইঞ্চি দূরত্ব রাখতে হবে। এরপর চার ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ দিয়ে ছিদ্র করে ওই ছিদ্রে টমেটোর চারা রোপণ করতে হবে।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লা সুলতান বলেন, এ উপজেলায় কৃষির বৈচিত্র্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এখানে পদ্মার চরাঞ্চল-সহ সমতল এলাকার বাউসা এবং আড়ানী ইউনিয়নে কৃষিতে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটেছে কতিপয় নিবেদিত শিক্ষিত তরুণদের কারনে। বর্তমানে এখানে যে সকল ফসল উৎপাদিত হচ্ছে তার মধ্যে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে বাউসার নজরুল ইসলাম-সহ আড়ানীর কয়েকজন শিক্ষিত তরুন যুবক ব্যাপক হারে সফলতা পেয়েছেন। টমেটো চাষ লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। টমেটোর ফলন এবং দাম দুটিই ভালো হওয়ায় তারা বেজায় খুশি। তাদের এ সাফল্য দেখে এখন অন্য চাষিরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
কৃষি অফিসারের মতে, মালচিং ব্যবহার করলে জমিতে প্রায় ১০ থেকে ২৫ ভাগ আদ্রতা সংরক্ষণ করা সম্ভব। এ পদ্ধতি খুবই সুন্দর একটা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করলে জমিতে আগাছা হয়না বললেই চলে। মালচিং পেপারে কার্বন থাকার কারণে আদ্রতা ধরে রাখে এবং সারের গুনাগুন ঠিক থাকে ফলে ফলনও বৃদ্ধি পায়।