শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ সুর্যের হাসি ক্লিনিকে অপারেশনের (সিজারিয়ান) না করে চিকিৎসক তেমন পরীক্ষা ছাড়াই তাড়াহুড়া করে বাচ্চা প্রসব করায় তাহরিমা (৩৭) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তাহরিমা উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মাস্টার আলতাফ হোসেনের স্ত্রী।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর প্রসূতির বাচ্চা প্রসব করতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় তাহরিমার মৃত্যু হয়। জরায়ু ছিড়ে রক্তখরন বন্ধ না করতে পেরে কিøনিক কর্তৃপক্ষ রাতে রোগীর অভিভাবককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নেয়ার পরামর্শ দেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকালে শ্রীপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আলতাফ হোসেন তার গর্ভবতী স্ত্রী তাহরিমা বেগমের পেটের ব্যথা জনিত বিষয়ে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ বাজারের আল আমীন টাওয়ারের ২য় তলায় অবস্থিত বেসরকারী সূর্যের হাসি ক্লিনিকে নেয়। সেখানে তাকে ভর্তি নিয়ে প্রসব ব্যাথা বলে বাচ্চা হওয়ার ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। রাত ৮টার দিকে সিজার না করে নরমালি বাচ্চা হবে বলে তাকে প্রসব কক্ষে নেয়। সেখানে বাচ্চা হওয়াতে তারা জোরাজোরি করে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তার রক্তক্ষরণ বেশী হতে লাগলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার জন্য বলা হয়। রোগীকে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়া হলে চিকিৎসা দিয়ে কিছুতে রক্ত বন্ধ করা যায়নি। পরে তাকে অপারেশনে নেয়া হলে ডাক্তারা তার জরায়ু ও নাড়ি ছেঁড়ার ব্যাপারে নিশ্চিন হন। তার জরায়ু ও নাড়ি ক্ষতিগ্রস্থের বিষয় নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার আগে তার মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওই ক্লিনিকের ম্যানেজার মাকছুদা বলেন, প্রসব ব্যাথার কারণে তাকে নরমালি প্রসব করার ব্যবস্থা নেয়া হয়। বাচ্চা হবার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হবার কারণে তাকে রাজশাহীতে নেয়ার কথা বলায় তারা সেখানে চলে গেছেন। পরে সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
এছাড়া ওই ক্লিনিক কার পরিচালনায় চলে জানতে চাইলে তিনি ডা. অসীম নামে এক ডাক্তার থাকেন বলে জানান। অপর দিকে ওই ক্লিনিকের ম্যানাজার মাকছুদা জানান, তাহরিমার আগে থেকে সমস্যা ছিল। চিকিৎসক না দেখে অপারেশন করলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে বিষয়টি কেন হলো তা খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় কোন পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।