বুধবার, ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
নুরুজ্জামান, বাঘা: দুই পাশে নদী। মাঝ খানের উচু জায়গায় পানিবন্দী বাঘার লক্ষ্মীনগর চরের প্রায় শতাধিক পরিবার। ক্রমাগত বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহের কারণে এখন তারা চরম ভাবে বিপদগামী। শুধু লক্ষ্মীনগর নয়, চরাঞ্চলের সকল নিচু এলাকায় এখন পানি জমে বন্যায় পরিনত হয়েছে। এর ফলে ডুবে যেতে শুরু করেছে জমির ফসল। একই সাথে কোন-কোন এলাকায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন।
এসব বানভাসিদের মাঝে শনিবার ত্রাণসামগ্রী দিয়েছেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু সাইদ চাঁদ।
বাঘা উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত চকরাজাপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। পদ্মা ঘেষা ইউনিয়ন হওয়ার কারণে প্রতি বছর এ অঞ্চলে কম-বেশি বন্যা হয়ে থাকে। যার ব্যত্বয় ঘটেনি এবারও। এবার হাটাৎ করে পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে কালিদাস খালি, লক্ষ্মীনগর, আতার পাড়া ও পলাশী ফতেপুর সহ বেশ কিছু এলাকা। ফলে প্রায় দেড় হাজার বিঘা ফসলী জমি ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। একই সাথে পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন হাজার-হাজার মানুষ এবং একটি স্কুল ও মসজিদ। এ ছাড়াও শত-শত বিঘা কলা বাগান এখন পানির নিচে অবস্থান করছে।
তবে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট এবং স্থানীয় প্রশাসনে তদারকি না থাকার কারণে এ পর্যন্ত এ এলাকায় বিশেষ কোন ত্রাণ সামগ্রী পৌছায়নি বলে অভিযোগ করেছেন চরঞ্চলবাসী। এদিক থেকে শনিবার সকালে চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে-গ্রামে গিয়ে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে দশ কেজি করে চাল, পাঁচ কেজি করে আটা ও ডাল সহ সুখনো খাবার পৌঁছে দিয়েছেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সাবেক চারঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু সাইদ চাঁদ।
এদিকে দীর্ঘদিন পর জেল থেকে বেরিয়ে আসা আবুসাইদ চাঁদকে কাছে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়েছেন চরাঞ্চলবাসী। চরাঞ্চলের বিএনপি নেতা-মোল্লা খামারু ও জগলু শিখদার-সহ আরো অনেকে তাদের প্রিয় নেতাকে কাছে পেয়ে আবেগ-আপ্লুত হয়ে দলীয় স্লোগান দিয়েছেন। তাদের মুখে এবার লক্ষ করা গেছে কেবল জয়ের আনান্দ আর উল্লাশিত স্লোগান। তারা আশাবাদি চারঘাট-বাঘায় আবু সাইদ চাঁদ দলীয় মনোনয়ন পাবেন। এরপর তারা-তাদের প্রিয় নেতাকে জয়ের মালা পরাবেন।
এ ত্রাণ বিতরণে অন্যদের মধ্যে ছিলেন, বাঘা উপজেলা বিএনপির একটানা তিন বারের নির্বাচিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির বর্তমান সদস্য সচিব আশরাফ আলী মলিন, যুগ্ম-সম্পাদক মোকলেসুর রহমান মুকুল, চারঘাট পৌর সভার সাবেক মেয়র বিপুল হোসেন, বিএনপি নেতা জালালা উদ্দিন, সাবেক বাঘা পৌর কাউন্সিলর ও পৌর বিএনপির সভাপতি তফিকুল ইসলাম তফি, উপজেলা বিএনপি নেতা সুরুজ জামান, জেলা ছাত্রদল নেতা শামিম সরকার, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, আমি সম্প্রতি পদ্মার চরাঞ্চলে ভাঙ্গন দেখতে গিয়েছিলাম। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। এর ফলে তারা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ গয়েছে। আমি ইতোমধ্যে শতাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী পৌছানো সহ এ বিষয়ে খাবার ও আর্থিক সহায়তা চেয়ে একটি প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক সহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করেছি।