সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় যানজট নিরসন ও সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাফিক পুলিশের দাবি

নুরুজ্জামান, বাঘা:

রাজশাহীর বানেশ্বর থেকে আঞ্চলিক মহাসড়কটি চলে গেছে পাবনার ঈশ্বরদী। মাঝে রাজশাহীর বাঘা বাজার। এ বাজারের পাশেই ৫০ টাকার নোটের ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ এবং দিঘী সহ প্রাচীন স্থাপনা দেখতে প্রতিদিনই ছুটে আসেন হাজার-হাজার দর্শনার্থীরা। বাড়ে যানবাহনের চাপ। কিন্তু বাঘা বাজারে দায়িত্বে থাকেন না কোন ট্রাফিক পুলিশ। ফলে সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকে এখানে।

 

বিশেষ করে প্রাইভেটকার, রিকশা, অটোরিকশা ও ভ্যানের মতো ছোট ছোট যানগুলো দাঁড়িয়ে থাকে সড়ক দখল করে। এতে যানজট আরও তীব্র হয়। তাই এ বাজারে ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে এরাকার সচেতন মহল। বাঘা পৌর এলাকার পাশাপাশি আড়ানী পৌর এলাকাতেও নিয়মিত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ও সার্জেন্ট মোতায়েনের দাবি তাদের।

 

বাঘায় বেপরোয়া যান চলাচল ও সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে ইতোমধ্যে উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দুই পৌরসভার দু’জন মেয়র-সহ সুশীল সমাজের লোকজন। তারা বলছেন, ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় বেপরোয়া যান চলাচলে ঘটছে প্রায়স: সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি।

 

স্থানীয়রা বলছেন, বাঘায় প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির দুটি পৌরসভা রয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে তিন এবং চার রাস্তার মোড়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে এখানে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানি ও যানজট- দুটোয় কমে আসবে। তাঁরা পাশ্ববর্তী বেশ কিছু উপজেলায় ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

 

লোকজনের অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশ না থাকার কারণে উপজেলার প্রত্যেকটি সড়কে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে যানবাহন চলাচল করার কারণে বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা। এর ফলে মাঝে মধ্যে প্রাণহানিরে ঘটনাও ঘটছে। লোকজনের দাবি, এই মুহুর্তে উপজেলার দুটি পৌর বাজারে ট্রাফিক পুলিশ দেয়া হোক।

 

বাঘার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, রাজশাহী জেলার মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের দিক দিয়ে বাঘা একটি ঐতিহাসিক উপজেলা। এ উপজেলায় রয়েছে দুটি পৌরসভা-সহ অসংখ্য ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান।বাঘা থেকে সরাসরি সড়কপথে রাজধানী ঢাকাসহ নাটোর, বগুড়া, রংপুর, ঈশ্বরদী, পাবনা, কুষ্টিয়া, খুলনা ও বগুড়ার যোগাযোগ রয়েছে। বাঘা বাজারের যানজটের কারণে অসংখ্য মানুষকে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই এ বাজারে ট্রাফিক পুলিশ জরুরি। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে প্রচুর যানবাহন চলে বলে আড়ানী বাজারেও ট্রাফিক দরকার।

 

উপজেলার কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বাঘা বাজার থেকে প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক বাস-ট্রাক, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার চলাচল করে দেশের বিভিন্ন রুটে। এছাড়াও রয়েছে অন্যান্য পরিবহন। বাঘা বাজার এবং আড়ানী পৌর এলাকায় যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ খুবই জরুরি। তাঁদের দাবি, এ দুটি স্থানে ট্রাফিক পুলিশ দিলে একদিকে যেমন লাইসেন্সবিহীন যানচলাচল বন্ধ হবে, অন্যদিকে কমবে সড়ক দুর্ঘটনা। তাঁরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

 

এ বিষরেয় জানতে চাইলে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘যানজট নিরসনের বিষয়ে গত দুইমাস পুর্বে উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় কথা উঠেছিল। বিষয়টি থানার তৎকালীন ওসি আমিনুল ইসলাম কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। তারপর বিষয়টির আর অগ্রগতি হয়নি। এটা নিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা উপর মহলে কথা বলবেন বলে জানান।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৪ | সময়: ৬:৪৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine