রবিবার, ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা ও দুর্গাপুর: রাজশাহীর বাগমারা ও দুর্গাপুরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১৪ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও কৃষক লীগের নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার রাতভর এ অভিযান চলে।
রাজশাহীর বাগমারা থানার পুলিশ মঙ্গলবার রাতভর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের ৯ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার দেউলিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪৮) ও মোনায়েম হোসেন (৩০) সাজুরিয়া গ্রামের ফিরোজ রশীদ (২৮), দানগাছী মহল্লার নাইমুল ইসলাম (২১), হাটগাঙ্গোপাড়া ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মসলেম উদ্দীন (৪৬), জামগ্রাম মহল্লার আক্কাছ আলী (৪৫), কোনাবাড়িয়া গ্রামের বেলাল হোসেন (২৮), কাষ্টনাংলা গ্রামের আব্দুল খালেক (৫২), পূর্ব দৌলতপুর গ্রামের আবুল কাশেম (৫০)।
গ্রেপ্তারকৃতরা সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে নজরুল ইসলাম (৪৮) নামের একজন চুরি মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী বলে বাগমারা থানার পুলিশ জানিয়েছেন। অন্যান্যরা গত ৫ আগষ্ঠ যুবদল নেতা মনসুর রহমানকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা মামলায় জড়িত বলে বাগমারা থানার পুলিশ জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পূর্বে উপরোক্ত আসামীরা উপজেলার ভবানীগঞ্জ বাজারে সংগঠিত হয়ে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপর হামলা, ভাংচুর, ছিনতাই ও গুলি চালিয়ে হত্যার চেষ্টাসহ নানা ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। বর্তমান সময়ে তাদেরকে চিহ্নি করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে বাগমারা থানার পুলিশ জানিয়েছেন। এ পর্যন্ত বাগমারা থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আওয়ামী লীগের অর্ধশত নেতাকর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গেছে।
বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন আসামী আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
অন্যদিকে, রাজশাহীর দুর্গাপুরে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নাশকতার মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও কৃষক লীগের ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দিনগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পৃথক সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দুপুরে হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান (২৮), ঝালুকা ইউনিয়নের চৌপুকুরিয়া ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জহরুল হক (৩৫), কিসমত গণকৈড় ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম আলী (৩৮), পৌর এলাকার শালঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ কর্মী সুমন (৩৬) ও মাসুদ রানা মিঠু (৪০)। তবে আটককৃতদের নাম এজাহারে উল্লেখ্য নাই বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর হত্যাচেষ্টা ও নাশকতা চালানোর অভিযোগ এনে থানায় মামলাটি দায়ের করেন উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের চক জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের শাহাদত হোসেন।
বাদী এজাহারে উল্লেখ্য করেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আগের দিন অর্থাৎ গত ৪ আগস্ট উপজেলা সদরের মেডিকেল মোড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এজাহার নামীয় আসামীরা সহ অজ্ঞাত আসামীরা প্রকাশ্যে দিবালোকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। আসামীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহযোগিতাকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যাপক নাশকতা চালায়।
দুর্গাপুর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
তবে আটককৃত আসামীরা এজাহার নামীয় আসামী না হওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।