বুধবার, ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: দুই দশকের বেশি সময় ধরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। ২০০২ সালে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় ইউনিলিভারের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড লাইফবয় এবং সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ-এর অংশীদারিত্বে যাত্রা শুরু করে এই ভাসমান হাসপাতাল। ভ্রাম্যমাণ এই হাসপাতালটি গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও বগুড়া জেলার প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীপথ ঘুরে ঘুরে চরাঞ্চলের ও নদীভাঙন কবলিত মানুষকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে।
লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের মধ্যে রয়েছে গাইনোকোলজি, চক্ষু, প্যাথলজি, ডিজিটাল এক্স-রে, ফার্মেসি সেবা এবং দুটি অপারেশন থিয়েটারের সুবিধা। জরুরি প্রয়োজনে রোগীদের যাতায়াতের জন্য হাসপাতালের নৌ অ্যাম্বুলেন্স এবং ট্রলারও রয়েছে। হাসপাতালে প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যা, মাতৃত্বজনিত সেবা, শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যা, দাঁতের চিকিৎসা, ঠোঁটকাটা ও তালুকাটা, পোড়া রোগী, হাত-পা বাঁকা (অর্থোপেডিক সার্জারি), হার্নিয়া, হাইড্রোসিল, টিউমার এবং চোখের ছানি অপারেশনসহ বিভিন্ন জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। হাসপাতালটির রোগীদের সেবা দিতে বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।
২০২৩ সাল পর্যন্ত হাসপাতালটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৭৫৮ জন রোগিকে সর্বমোট ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৯২৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছে। যার মধ্যে সার্জারির সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৫১৮টি এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয় ৪৫ হাজার ৮০৯ জনকে। এছাড়া- সুবিধাবঞ্চিতদের চিকিৎসায় ৪৪১টি হেলথ ক্যাম্পেরও আয়োজন করে হাসপাতালটি।
এছাড়াও, হাসপাতালের পাশে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়। এই ক্যাম্পে নারী ও পুরুষদের সেবা প্রদানের জন্য পৃথক পৃথক ওয়ার্ড এর ব্যবস্থা রয়েছে। যাতে করে অস্ত্রোপচারের রোগীরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেখানে থেকে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারেন। সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের বিনামূল্যে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয় হাসপাতালটিতে।
ফ্রেন্ডশিপ-এর প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান বলেন, ‘মানসম্মত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবাসমূহ সঠিক সময়সীমা, পরিমাণ এবং পদ্ধতিতে সরবরাহ করা প্রয়োজন, যাতে টেকসই প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এটি করতে হলে পুরো ইকোসিস্টেম (ভৌগোলিক ও সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট) সম্পর্কে জানা এবং উদ্ভাবনী চিন্তার সঙ্গে কাজ করা জরুরি। প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে যাতে মানুষ আস্থা রাখতে পারে এবং এর ফলে সমগ্র জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্য সেবার দিক দিয়ে উন্নতি লাভ করতে পারবে।’
ইউনিলিভার বাংলাদেশের (ইউবিএল) কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর শামিমা আক্তার বলেন, ‘২২ বছর আগে লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল গড়ে তুলতে আমরা ‘ফ্রেন্ডশিপ’-এর সঙ্গে অংশীদারিত্ব তৈরি করি- এ হাসপাতালটি সুবিধাবঞ্চিত বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। আমাদের উদ্দেশ্য-চালিত ব্র্যান্ডগুলো, যেমন- লাইফবয় দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও পরিচ্ছন্নতায় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা খাত এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছে। মান-সম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগ মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও বাংলাদেশের দূরবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা সেবা পেতে সমস্যার মুখোমুখি হতো। দুই দশক ধরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিয়েছে এই হাসপাতাল।’