মঙ্গলবার, ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: নগরীতে স্ত্রীর চেক হাতিয়ে নিয়ে স্বামীর জালিয়াতির মামলায় স্ত্রী বিপাকে। এ জালিয়াতির মামলা থেকে রেহাই পেতে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই ভুক্তভোগি স্ত্রী।
মামলার আবেদন থেকে জানা যায়, নগরীর বোয়ালিয়া থানার রামচন্দ্রপুর এলাকার আরমান আলী শেখের ছেলে অভিযুক্ত স্বামী মো. স্বপন। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল মেহেরচন্ডি এলাকার আসাদ আলীর মেয়ে মোসা: আয়েশা খাতুন তুলি’র সাথে মো. স্বপনের পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই স্বপন দ্রুত আর্থিক লাভের কথা বলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের সুবিধার জন্য স্ত্রী তুলিকে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে একটি একাউন্ট খুলে দেন। যার ব্যাংক হিসাব নং ০২০০১৯০০৬০০২৫। পরবর্তীতে উক্ত হিসাব নম্বরের বিপরীতে চেক ইস্যু হলে স্বপন ভুক্তভোগী তুলিকে ভুল বুঝিয়ে ও কৌশলে চেকের পাতাগুলোতে স্বাক্ষর করে নেয়।
এরপর তাদের সংসার জীবনে বনিবনা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। এর প্রেক্ষিতে স্বামী স্বপনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তুলি। তবে এরইমধ্যে তুলিকে ফাসানোর জন্য তুলি’র বিরুদ্ধে এন.আই.এ্যাক্টের ১৩৮ ধারার মামলা করে উত্তরণ সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি, লিমিটেড; রাজশাহী।
এদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলার পর ভুক্তভোগী বাবার বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। এসময় তার স্বাক্ষর করা চেকগুলো ফেরত চাইলেও স্বপন সেগুলো নিজের দখলে রেখে দেন। পরে ভূক্তভোগীর পরিবারের সদস্যারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই চেকগুলো জালিয়াতি করে বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়েছেন স্বপন। চেকগুলো উদ্ধারের উদ্দেশ্যে আদালতের শরণাপন্ন হন ভূক্তভোগী। এর প্রেক্ষিতে ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট সাবিহা সুলতানা রায় ঘোষণা করেন। এতে স্বপনের কাছে থাকা ২৩ টি চেক আদালত কর্তৃক বাতিল ঘোষণা করা হয়।
বাতিল করা চেক নাম্বার গুলো হলো-৩৪৪৫২৪১, ৩৪৪৫২৪৪, ৩৪৪৫২৪৫, ৩৪৪৫২৪৭, ৩৪৪৫২৫২, ৩৪৪৫২৫৩, ৩৪৪৫২৫৪, ৩৪৪৫২৬৪, ৩৬০৮১৬১ থেকে ৩৬০৮১৭৫-২৩।
এদিকে, উত্তরণ সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি থেকে বড় অংকের ঋণ নিয়েছিলেন স্বপন। সেখানে তুলিকে জামিনদার উল্লেখ করা থাকলেও তার নামেই ৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা পরিশোধের নির্দেশ চেয়ে মামলা করে প্রতিষ্ঠানটি। এই মামলায় ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার আদালতে হাজিরা দিয়েছেন ভুক্তভোগী। এতোগুলো টাকার মামলা ঘাড়ে চাপাই এবং ভবিষ্যৎ চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগি তুলি। তবে অভিযোগের বিষয়ে স্বপনকে একাধিকবার ফোন করলেও তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।