শনিবার, ২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
জেলা প্রতিনিধি, পাবনা:
পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভার ডেঙ্গু মশা নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, প্রচার, কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস মোকাবেলার সরকারি বরাদ্ধের ৪৩ লক্ষাধিক টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে আত্মসাত করার অভিযোগ পৌরসভার সাবেক দুই মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামানিক ও মাহবুবুল আলম বাচ্চুসহ ১৯ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত পাবনা কার্যালয়।
গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক, মোঃ মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার প্রধান আসামী মোঃ মিরাজুল ইসলাম প্রামানিক (৫৮) সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র। তিনি বোয়াইলমারী গ্রামের মজিবর রহমান প্রামানিক ছেলে। অপরজন মাহবুবুল আলম বাচ্চু(৪৮), তিনি কোনা বাড়িয়ার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি সদ্য বাতিল করা সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী, রাজবাড়ীর বার্থা খানপাড়ার লোকমান হোসেনের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান (৫৪), সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী, দোগাছির খয়েসূতি গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে মোঃ শাহীনুজ্জামান (৫৩), সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক হিসাবরক্ষক মোঃ আব্দুল বারিক (৪৯), সাঁথিয়া পৌরসভার কার্য-সহকারী, মোঃ আবু ইছা শফিউল আলম (৪৭), সাঁথিয়া পৌরসভার প্রধান সহকারী মোঃ নুরুজ্জামান (৪৩), পৌরসভার এম.এল.এস.এস মোঃ নুরুল ইসলাম (৪৬), ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ হামিদ ব্যাপারী (৬৬), ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ চাঁদ আলী (৫২), ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর
মোঃ আঃ লতিফ (৬২), ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মোঃ আঃ হাই (৬৫), ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ তোছাদ্দেক হোসেন নাসিম (৪৩), ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আফছার আলী (৬৮), ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আলাউদ্দীন (৩৩), ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মোঃ শরিফুল ইসলাম (৪৪), ৭,৮,৯ মহিলা কাউন্সিলর মোছাঃ জীবন নাহার (৬০), ১,২ ৩ এর সাবেক কমিশনার (১৮) মোছাঃ বুলবুলি খাতুন (৫৫), ৪,৫,৬ এর মোছাঃ হাসিনা খাতুন (৪৭।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলাধীন সাঁথিয়া পৌরসভার অনুকূলে স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে ডেঙ্গু মশক নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও প্রচার, কোভিড-১৯ করোনা মহামারি (করোনা ভাইরাস) মোকাবেলার লক্ষ্যে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১৫,৯০,৪০০/- (পনেরো লক্ষ নব্বই হাজার চারশত) টাকা; ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১১,০৩,৮৬৭/- (এগারো লক্ষ তিন হাজার আটশত সাতষট্টি) টাকা; ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১১,২৫,১৫০/- (এগারো লক্ষ পচিশ হাজার একশত পঞ্চাশ হাজার) টাকা সবার যোগসাজশে ভুয়া বিল-ভাউচার ও কোটেশন তৈরি করে আত্মসাত করেছেন।
এছাড়াও আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে সাঁথিয়া পৌরসভার কোন জীপ গাড়ী না থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত গাড়ীতে জ্বালানি ব্যয়ের জন্য বিল উত্তোলন করে মোট ২,১৫,৯৬৬/- (দুই লক্ষ পনেরো হাজার নয়শত ছিয়ানব্বই) টাকা ও সাঁথিয়া পৌরসভার ড্রেন পরিষ্কারের নামে ভুয়া বিল ভাউচার প্রস্তুত করে ২,৭২,১৫০/- (দুই লক্ষ বাহাত্তর হাজার একশত পঞ্চাশ) টাকা আত্মসাত করেছেন। সর্বমোট ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৫৩৩ টাকা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ভুয়া বিল-ভাউচার ও কোটেশন তৈরি করে বিল উত্তোলন করে আত্মসাত করে দন্ডবিধির ৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক, মোঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পৌরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ঠিকমতো হয়েছে কিনা অনুসন্ধান করা হয়। করোনা ভাইরাস মোকাবেলার টাকা মানুষের জন্য খরচ না করে নিজেরা ভূয়া ভাউচার করে আত্মসাত করে।অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর মামলা করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।