রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বৈষম্যপূর্ণ কর্মসংস্থানের অভিযোগ তুলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ তাদের দলের বাইরে কারো চাকরি দিতে চায়নি, যা সমাজে বড় বৈষম্যের উদাহরণ। মাদ্রাসার ছাত্রদের পুলিশে চাকরি দেয়া হয়নি, বিরোধীদলীয় কর্মীদের নিয়োগে বঞ্চিত করা হয়েছে। এর ফলে পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, এবং র্যাবের মতো বাহিনীগুলোর মাধ্যমে পুরো সমাজে বৈষম্যের শাসন তৈরি করা হয়েছে। সোমবার রাজশাহীতে ‘বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) এর আদর্শ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জনগণের করের অর্থ দিয়ে পুলিশ বেতন নেয়, অস্ত্র ও বুলেট কিনে। কিন্তু সেই পুলিশই জনগণকে হত্যা করে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার বৈষম্যের নীতি নিয়ে চলেছে এবং এটাকে একটি ‘খুনি সরকার’ বলেও আখ্যা দেন। তিনি বলেন, অন্তর্র্বতী সরকার সংস্কার শুরু করেছে। কিন্তু প্রশাসনের যেসব অংশ পচে গেছে তাদের শুধুমাত্র স্থানান্তর করে সমাধান আসবে না। প্রশাসনে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসনের কাঠামোতে আল্লাহভীরু লোকদের নিয়োগ দিতে হবে। সৎ নেতৃত্ব ছাড়া বৈষম্যহীন সমাজ গঠন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যের বিষয়টি নতুন নয়। ১৯৭১ সালের আন্দোলন বৈষম্যকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছিল। তবে, স্বাধীনতার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা কেউ বৈষম্য দূর করেনি। এই বৈষম্য চলতেই আছে। আমার কাছে মনে হয় আল্লাহ তাআলার সেই কথা- আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে কেবল এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে। তাই আল্লাহর গোলামি যতদিন প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন বৈষম্য চলছে, চলতেই থাকবে। এটা কেউ বন্ধ করতে পারবে না। তাই কোরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপরই জোর দেন তিনি। নায়েবে আমির বলেন, আমরা বৈষম্যহীন সমাজ মানি। কোরআন-সুন্নাহর সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত কোরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা এই রাষ্ট্র পরিচালিত না হবে, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হবে, ততদিন বৈষম্য চলতেই থাকবে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, আল্লাহর ভয় যাদের আছে তাদেরকে দায়িত্ব দিতে হবে। প্রয়োজন হলে নতুন পুলিশ, নতুন আর্মি, নতুন বিজিবি নিতে হবে। প্রশাসনের যত কাঠামো আছে সেখানে নতুন লোক, যারা আল্লাহর ভয়ে ভীত তাদের নিতে হবে। যারা ন্যায় ও ইনসাফ করতে পারবে এমন লোক না বসানো পর্যন্ত এই পচা সমাজ ভালো হবে না। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম আবদুল লতিফ। প্রধান আলোচক ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মাওলানা নাসির উদ্দিন হেলালী। প্রবন্ধকার ছিলেন রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মাসুদ আলম। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।