সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় সাথী ফসল ফলিয়ে সাবলম্বী আব্দুল খালেক

নুরুজ্জামান,বাঘা: স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই- যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না। ভারতের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এবং দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি এ.পি.জে আব্দুল কালামের বিখ্যাত এক উক্তিটি বুকে ধারণ করে নতুন-নতুন উদ্ভাবন এবং স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে এখন সাবলম্বী আব্দুল খালেক। তিনি একজন শিক্ষিত যুবক। দেশে চাকরির বাজার গরম। তাই নিজ উদ্যোগে নেমে পড়েছেন কৃষি খাতে। আর তাকে সার্বিক ভাবে সহায়তা করছেন উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান। তিনি এ বছর সাথী ফসল ফলিয়ে শুধু বেগুন থেকে আয় করেছেন ২০ লক্ষ টাকা। তার সফলতা দেখে এখন অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন কৃষির দিকে।

 

 

প্রিয় পাঠক, আপনারা ছবিতে যে দু’জন মানুষকে দেখতে পাচ্ছেন, এর মধ্যে পদ্মার চরাঞ্চলের একটি জমিতে বেগুন হাতে নিয়ে ক্ষেতের পাশে বসে আছেন মো: আব্দুস সামাদ। অপর একজন সমতল এলাকার বাউসা ইউনিয়ে আব্দুল খালেকের বাগানে বিদেশী ফল ড্রাগন ধরে স্থানীয় সাংবাদিককে দেখাচ্ছেন বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান।

 

 

 

এই অফিসারের কাজ হলো কৃষি ক্ষেত পরিদর্শন করে বেড়ানো। সেই সাথে কৃষকদের নানা পরামর্শ প্রদান। তাঁর মতে, রাজনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষানীতি, যুবনীতি সবকিছুর পেছনে যেমন অর্থনৈতিক মুক্তির আকাঙ্খা প্রতিয়মান। তদরুপ সম্মান, পুরস্কার প্রাপ্তি, খ্যাতি, ক্ষমতা ও ভাল কাজের স্বীকৃতির মূলে কাজ করে একজন মানুষরে অধ্যাবসায়। যার ব্যত্বয় ঘটিয়েছেন বাঘার শিক্ষিত যুবক আব্দুল খালেক। তিনি একাধারে একই জমিতে সাথী ফসল হিসাবে নতুন জাতের তাল বেগুন, পেয়ারা এবং মরিচ চাষ করে ইতোমধ্যে স্ববলম্বী হয়েছেন। তাঁর কেবল বেগুন বিক্রী করে ইতোমধ্যে লাভ হয়েছে 10 লক্ষ টাকা। খালেকের সফলতা দেখে এখন অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন কৃষির দিকে।

 

 

বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান জানান, অত্র উপজেলায় কৃষির বৈচিত্র্যময় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। বাঘায় কৃষিতে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটিয়েছে কিছু নিবেদিত শিক্ষিত তরুন যুবক। এই শিক্ষিত তরুণদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, এ উপজেলায় কৃষির অনেক গুলো প্রজেক্টের মধ্যে একটি ২০ বিঘার প্রজেক্ট তৈরী করেছেন বাউসা ইউনিয়নের আব্দুল খালেক। তিনি পার্শ্ববর্তী আড়ানি ইউনিয়নের বেড়ের বাড়িতে একটি জায়গায় ১২ বিঘা এবং তাঁর কিছুটা দূরে ৮ বিঘা জমি জুড়ে তাঁর প্রজেক্ট। ২ বছর আগে পেয়ারা গাছ এবং সাথী ফসল হিসেবে গ্রীষ্মকালীন চারা পেঁয়াজ ও মরিচ আবাদ করে ছিলেন। এরপর প্রতি বিঘা জমিতে ১২০ মণ পেঁয়াজের ফলন পেয়ে ছিলেন। এ বছর সেই পেয়ারার সাথে সাথী ফসল হিসেবে আবারও তাল বেগুন এবং মরিচের আবাদ শুরু করেছেন তিনি। এতে করে তিনি আর্থিক ভাবে বেশ সাবলম্বী হয়েছেন।

 

 

কৃষি অফিসারের মতে, যারা এতদিন কৃষিকে লাভজনক পেশা হিসেবে গ্রহণ না করে শুধু চাকরির পিছনে ছুটছেন অথবা হালকা শিল্প বা কোন দোকান দিয়ে উপার্জনের সুযোগ খুঁজছেন তাদের বলছি, আপনারা কৃষিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। কারণ আমাদের দেশের সরকার কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিচ্ছেন। আমার বিশ্বাস অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষিত তরুণ কৃষক(যুবক)রা বিদেশী ফসল ড্রাগন ফল, ক্যাপসিকাপ মরিজ, চিয়াসিড ইত্যাদি ফসল ফলিয়ে বাংলাদেশের কৃষিতে আমলুক পরিবর্তন সাধন করবে এবং তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন আমার মতো সকল উপজেলা কৃষি অফিসারগণ।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪ | সময়: ৩:৩৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine