রবিবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির বাড়িসহ ৯টি বাড়ি, পাঁচটি মোটর সাইকেল এবং ২৬ টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ে এসব ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা বিএনপি।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধরা হলেন, বিএনপি কর্মী রাজেন্দ্রপুর গ্রামের শহীদুল ইসলাম মালিথা (৩৮), সাগর আলী (২০), মামুন হোসেন (২১), জাহিদ আলী (১৮) ও মশিউর রহমান (২৮), দাসগ্রামের রবিউল করিম (৩৯)।
এছাড়া সংঘর্ষে দাসগ্রামের মেহেদী হাসান (২৮), শাহ আজিজ (৪০), লিটন (৩৮) ও আওয়ামী লীগ কর্মী শাহিন মালিথা (৬০) আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শহীদুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্যদের বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল টিপু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। কয়েক মাস আগে বিএনপির কমিটি গঠনের পরদিন তা বাতিলের জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে হাবিবুর রহমানের সমর্থকরা। গত ৫ই আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আলাদা আলাদা ভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা।
চান্দাই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল টিপু বলেন, হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা শনিবার জনি নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে মারপিট করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে রোববার সন্ধ্যায় তারা পুনরায় শতাধিক লোক নিয়ে এসে গুলি চালিয়ে ও ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এ সময় লোকজন পালিয়ে গেলে দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ে মোট ২৬ টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে। পরে হামলাকারীরা তার নিজেরসহ সাইদুল ইসলাম, সালেক আলী, মৃদুল, ইউনুস আলী, আনিসুর রহমান, আব্দুল হান্নান, নুর নবী, খায়রুল ইসলাম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহুরুল মালিথার বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে।
তবে সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আব্দুল আউয়াল টিপু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিকালে বিনা উস্কানীতে দাসগ্রাম বাজারে আমার দোকান ঘর ও অফিস এবং যুবদলের কার্যালয় ভাংচুর করে। পরে খবর পেয়ে আমার সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানে গেলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় সেখানে কিছু ঘটনা ঘটলেও গোলাগুলি ও লুটপাটের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান বলেন, আহতদের মধ্যে দুজনের শরীর থেকে অপারেশন করে গুলি বের করা হয়েছে। অপর চারজনের শরীরে রাবার বুলেটের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক শাফিউল আযম খান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।