বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে বিএনপি নেতা মিলন: তথাকথিত উন্নয়নের নামে রাজশাহীতে গাছ কটে মরুভূমি করা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী পালন করা হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনীতে তিনি বলেন, বাংলার ইতিহাসে সব থেকে ঘৃন্য ব্যক্তি হচ্ছে সাবেক স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী খুনি শেখ হাসিনা। তিনি মীরজাফরকেও হার মানিয়েছেন। তার নামটা বাংলাদেশের ইতিহাসে এতটাই নিন্দনীয় ও কুলশীত হয়েছে যে আজ থেকে মায়েরা তাদের কন্যা সন্তানদের নাম আর কেউ হাসিনা রাখবেনা। তিনি আরো বলেন, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট ও জালিম সরকারকে ছাত্র-জনতা আন্দোলন করে বিতারিত করেছে। প্রান ভয়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। এর ফলে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত ও দেশ পুণরায় স্বাধীন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এই দেশে যারা অপকর্ম করছে তাদের নামে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেন তিনি। সেইসাথে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে না মেশার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হচ্ছে। এই সকল মামলায় ৫০০-৬০০ জনকে আসামী করে মামলা করা হচ্ছে। মামলা এমনভাবে করছে মনে হচ্ছে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কারন এই মামলায় যখন তারা হাজিরা দিতে আসবে তখন সবাই এক সাথে আসবে। তাহলে কি দাঁড়াবে চিন্তা করতে হবে। এজন্য যারা প্রকৃত দোষি তাদেরকে বেছে বেছে মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বনের পরিমান দিনে দিনে কমে আসছে। বর্তমানে দেশের ১০ভাগ বনভূমিও নেই। এরপর অপরিকল্পিতভাবে গাছ কেটে বন উজার করছে। রাজশাহী এর বাহিরে নয় উল্লেখ করে মিলন বলেন, তথাকথিত উন্নয়নের নামে রাজশাহীতে গাছ কটে মরুভূমি করা হয়েছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অথচ বিএনপি চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা, রাসিক সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনুর সময় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পরিবেশের উপরে প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলো। অথচ সদ্য সাবেক মেয়র সেটা নষ্ট করে ফেলেছে।
শুধু তাইনয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অনেক বড় বড় গাছ ছিলো। সাবেক পরিচালক সেই গাছগুলো কেটে ফাঁকা করে ফেলেছে। ঐ সকল গাছে প্রচুর পরিমানে পাখির ছানা ছিলো। সেই পাখিল ছানাগুলো মাটিতে পওে মরেগিয়েছিলো। পরিবেশবিদরা অনেক আন্দোলন ও এ বিষয়ে পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করলেও সাবেক মেয়রএএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের কারনে সেই মামলায় কিছু হয়নি। অথচ হাসপাতালে হাজার হাজার রোগি থাকে। এই রোগিদের জন্য অক্সিজেন অত্যন্ত প্রয়াজন। কারন গাছ কার্বনডাই অক্সাসাইড গ্রহন করে এবং অক্সিজেন ছেড়ে দেয়। এই অক্সিজেন গ্রহন করে প্রানীকুল বেঁচে থাকে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বক্তব্য শেষে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের মৃত নেতাকর্মীদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ অসুস্থ্য নেতাকর্মীদের সুস্থ্যতা কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। সব শেষে প্রধান অতিথি উপস্থিত নেতৃবৃন্দদের নিয়ে হরিয়ান সুগার মিল এলাকায় বিভিন্ন গাছের চারা রোপন করেন।

হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব বাদশা মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য ও পবা উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, নওহাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপি সদস্য শেখ মকবুল হোসেন, হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহমান, হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রজব আলী, সাবেক সহ-সভাপতি লাল্টু মিয়া।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবের হোসেন সাদু, আসাদুজ্জামান বাবু ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দল রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান লিটন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম রাসেল, কাটাখালী পৌরসভার মেয়র প্রার্থী মাসুদ রানা। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু আহমেদ মামুন সহ হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের শত শত নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।