বৃহস্পতিবার, ২৭শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, শিবগঞ্জ: একদিকে ভাঙ্গন, অন্যদিকে ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ নাই। এ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পদ্মা পাড়ের ৫ গ্রামের প্রায় দেড় হাজার পরিবার। পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে পল্লীবিদ্যুতের বৈদুত্যিক খুঁটি পড়ে যাওয়ায় ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে গ্রামগুলোতে। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের ভাঙ্গন কবলিত বাবুপুর-সাত্তার মোড় এলাকায়।
এ এলাকার সেতারাপাড়া, লক্ষ্মীপুরচর, নিশিপাড়া কদমতলা ও বগলারচর গ্রামের প্রায় দেড় হাজার পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, খাম্বা পড়ে যাওয়ার বিষয়টি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে কানসাট পল্লীবিদ্যুতের কর্মকর্তাদের জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা। এতে করে গত ১০ দিন ধরে অন্ধকারে দিনপার করছেন তারা।
নিশিপাড়া গ্রামের মুদি দোকানদার বিকল আলী জানান, এমনিতেই তারা ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন পার করছেন তার উপরে গত ১০ দিন থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় তার দোকানের ফ্রিজে রাখা বিভিন্ন পণ্য বিশেষ করে পদ্মার মাছের জন্য জমিয়ে রাখা বরফ গলে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মাচ ও মাংস ছিল সেগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে।
কদমতলা গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, বয়স বেড়ে যাওয়ায় এবং জলবায়ু জনিত কারণে তাপমাত্র বেড়ে যাওয়ায় চরের মধ্যে এমনিতেই গরম বেশি। তার উপরে গত ১০ দিন থেকে প্রশাসনকে বলেও কারেন্ট চালু হচ্ছেনা। টিনের ঘরে এখন যান বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।
জেলা শহরের শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজের শিক্ষার্থী শাহলাল হোসেন (২০) জানান, এমনিতেই ভাঙ্গন আতঙ্গে রাত জেগে থাকি। ২ দিন পরপর বাড়ি সগাতে হয়। তার উপরে চরের মানুষের জন্য কেউ নাই। আমার মত শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করতে পারছেনা। দিনে পরিবারকে সহায়তা করে আমরা রাতে একটু পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সেটাও সম্ভব হচ্ছেনা।
পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, ১০ দিন আগে পদ্মা নদীর তীর সাত্তার মোড়ে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি নদীতে পড়ে যায়। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর পরেও মেরামতে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে তীব্র গরমে মানবেতর জীবন যাপন করছে তার ইউনিয়নের দেড় হাজার মানুষ।দোকান ও বাসা বাড়ির ফ্রিজের খাবারও নষ্ট হয়ে গেছে।আর শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াতো বন্ধ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লীবিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী ছানোয়ার হোসেন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটিটি পুনঃস্থাপন করা যাচ্ছে না। নদীতে পানি কমলে দ্রুত সমাধান করা হবে।