সোমবার, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
জেলা প্রতিনিধি, পাবনা: সরকার পতনের পর পালিয়ে থাকা পাবনার শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ খানকে অপসারণ ও নিয়মবহির্ভূত উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। এ সময় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
আজ রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় কলেজের প্রধান ফটকে মানববন্ধন করেন তারা। পরে পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণ ও বিচারের দাবি করে নানা শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি- গত ১২ বছর ধরে কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ খান আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ দখল করে আছেন। তার পদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবৈধ ঘোষণা করলেও আ.লীগ সরকারের প্রভাবশালীদের প্রভাবে তা তোয়াক্কাই করতেন না। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর বর্তমান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পলাতক থাকায় কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। বিগত আ.লীগ সরকারে আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষক ও কর্মচারীদের উপর জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে। কলেজের ৫০ জন শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে দেওয়া হয়েছে। অনেক নির্যাতন সহ্য করে আসছি। এখন আর এসব সহ্য করার সময় নেই।
শিক্ষকরা বলেন, বিভিন্ন সময়ে তাকে অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হলে পাবনার সাবেক এমপি জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স ও আ.লীগ নেতা কামিল হোসেন কলেজে এসে শিক্ষকদের হুমক-ধামকি দেন। তারা হুমকি দেন যে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ তাদের লোক, যত যাই করুক তাকে এখান থেকে সড়ানো যাবে না। এটা রাজনৈতিক পোস্ট। এটা নিয়ে কোন শিক্ষক বেশি বাড়া-বাড়ি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন আ.লীগের এসব নেতারা। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দ্রুত অপসারণ করে নতুন কোন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া দিয়ে কলেজে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসুক। অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি করেন।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ভর্তির সময় ও ফরম পুরণের সময় অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হলেও সেই টাকার কোন হদিস থাকে না। কলেজের সুনাম একদম নষ্ট হয়ে গেছে। পড়াশোনার কোন মান নেই। পাবনার এতো বড় একটি প্রতিষ্ঠানে কোন উন্নতি নাই, সব কলেজের কত উন্নতি হচ্ছে আমাদের কলেজের কেন উন্নতি নাই। কলেজে ভালো ওয়াশ রুম নেই, রুমগুলো ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। এই শিক্ষককে কলেজ ক্যাম্পাসে ডুকতে দেওয়া হবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোস্তফা কামাল, সহকারী অধ্যাপক ইসমাইল হোসেন, ইসলামের ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক মাখসুদা আক্তার খুশি, সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, আব্দুল মোমিন, মোকাদ্দেশ আলী, সাইদুল ইসলাম, মাসুদ করিম, শামসুল আলম, নাছিমা খাতুন, আবু সাঈদ, আব্দুর রাজ্জাক -২, নজরুল ইসলাম, একেএম আফজাল হোসেনসহ কয়েক শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে পাবনার শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ খানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মন্তব্য নিতে তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।