শনিবার, ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: পান পিঁয়াজ মাছ আলু বাগমারার ঐতিহ্যবাহী আবাদ। এখানকার মিষ্টি পান পৃথিবী বিখ্যাত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এই পান আগে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানী হতো। এখন ইউরোপ আমেরিকাতেও রপ্তানী হচ্ছে বাগমারার মিষ্টিজাতের পান। অন্যান্য ফসলের তুলনায় পানের উৎপাদন খরচ ও শ্রম তুলনামূলক কম এবং রোগবালাই এর ঝামেলা তেমন না থাকায় কৃষকরা পান চাষের প্রতি ক্রমেই ঝুঁকে পড়েছে। একটি পান বরজ থেকে আয় সারা বছর হয় বলেই কৃষকরা পান বরজের যত্ন নিতে সর্বদা সজাগ থাকেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এই উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নের প্রায় সবগুলোতেই কমবেশি পানের আবাদ হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি পান বরজ রয়েছে শ্রীপুর, তাহেরপুর, গনিপুর, গোয়ালকান্দি, দ্বীপপুর, শুভডাঙ্গা, বাসুপাড়া, গোবিন্দপাড়া, আউসপাড়া, মাড়িয়া ও সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নে। এসব এলাকায় মিষ্টিজাতের পান চাষ করে কৃষক ব্যাপক লাভবান হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় প্রতিবছর পানের আবাদ বেড়েই চলেছে।
মাড়িয়ার পান চাষী সাইফুল ইসলাম জানান, বছর দুই আগে দুই বিঘা জামিতে দুটি পান বরজ ছিল। সেখানে থেকে ভাল মুনাফা আসায় চলতি বছর আরো দুটি পান বরজ করেছি।
তাহেরপুর এলাকার পান চাষী শরিফুল জানান, মাত্র চার বিঘা জমির পান বরজের আয় থেকে তিনি একটি দালান বাড়ি নির্মাণ, এক ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখাপড়ার খরচ চালিয়ে ভালোই সংসার চালাচ্ছেন। তিনি মূলত বিদেশে রপ্তানীর জন্য উন্নত জাতের পান চাষ করেন।
শরিফুল আরো জানান, তাহেরপুর হাটে ঢাকা চিটাগাং থেকে বড় বড় পানের বেপারীরা আসেন। তারা বড় বড় ট্রাক ভরে পান কিনে নিয়ে যান এবং সে পান মধ্যপ্রাচ্য সহ ইউরোপ আমেরিকায় রপ্তানী হয়।
স্থানীয় পান চাষীরা জানান, পান চাষে তেমন ঝুকি নেই। মাঝে মধ্যে মড়ক জনিত সমস্যা দেখা দেয় । তখন কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে তারা স্প্রে করে থাকেন। স্থানীয় পান চাষীদের মতে, এখানকার মাটি ও আবহওয়া পান চাষের জন্য উপযোগি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এবং সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পান চাষ করে আরো কৃষক লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, পান চাষের জন্য তারা কৃষকদের সরকারি ভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মাত্র এক দিনের প্রশিক্ষণে কৃষক উন্নত জাতের পান উৎপাদন করতে পারবে এমন সহযোগিতাও তারা করে থাকেন।