বৃহস্পতিবার, ২৭শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে হওয়া ক্ষতি পোষাতে সরকারের কাছে এক বছরের জন্য ‘সফট লোন; চেয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি- বিজিএমই।
পোশাক কারখানা মালিকদের সবচেয়ে বড় এই সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার তিন দিনের মাথায় খন্দকার রফিকুল ইসলাম অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টার কাছে এই ঋণের আবেদন করেছেন। মঙ্গলবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) কার্যালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করে বিজিএমইএ ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইসিসি) বাংলাদেশের দুটি প্রতিনিধি দল।
সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন ঘিরে গত ৪ অগাস্ট দেশজুড়ে সংঘাত-সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি ঘোষণা করা হলে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায়’ এবং ‘শ্রমিক কর্মচারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে’ কারখানা বন্ধ রাখার আহ্বান জানায় বিজিএমইএ। প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে পরদিন প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপর দেশজুড়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। দেশজুড়ে থানাগুলোতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে রাজধানী পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে।
এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার অভাবে দুই দিন বন্ধ রাখার পর কারখানা খোলার ঘোষণা দেয় বিজিএমইএ। তবে নিরাপত্তার অভাব আর শ্রমিক-কর্মচারীরা ওইদিন সবাই কাজে যোগ না দেওয়ায় পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে পারেনি অধিকাংশ কারখানা। পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তার আশ্বাস পেলে চালু হতে থাকে পোশাক কারখানাগুলো।
আন্দোলনের সময়ে ১৬-১৭ দিনের মত পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ থাকায় ব্যাংক ঋণ পরিশোধ বাধাগ্রস্ত হওয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ক্রেতাদের কাছ থেকে না আসা ও রপ্তানি করতে না পারায় নতুন ঋণ প্রয়োজন জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, “কর্মীদের বেতন-ভাতা, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও বায়ারদের কনফিডেন্স ফিরিয়ে আনতে আমরা এক বছরের জন্য সফট লোন চেয়েছি।
“আমরা টাকার পরিমাণ পরে জানাব বলেছি। আমরা অনুমান করছি তা ১৮০০ থেকে ১৯০০ কোটি টাকা হবে। অনেকগুলো কারণে শুধু এই সেক্টরের জন্য সহায়তা চেয়েছি। এক বছরের মধ্যে সুদসহ ফেরত দিয়ে দিব।” অর্থ উপদেষ্টার কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছেন জানিয়ে বিজিএমইএর নতুন সভাপতি বলেন, “আমরাও তাকে সব ধরনের সহযোগিতার করব বলে আশ্বস্ত করেছি। বাংলাদেশের এক্সপোর্ট অনেক দ্রুত বাড়বে। আশা করছি, আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এবং সকলের সহযোগিতা থাকলে বিদেশি বায়ারদের আস্থা বাড়বে।”
ঋণের তিন কিস্তি পর পর পরিশোধ না করলে ব্যাংক তা খেলাপি হিসেবে দেখায়। মাঝখানে তা ছয়টি কিস্তি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবসায়ীদের চাপে। বন্যা ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে উৎপাদন বন্ধ থাকায় তা পুনর্বহাল চেয়েছে বিজিএমইএ। সরকার পরিবর্তনের হাওয়ায় পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচন দাবিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবির পাঁচ দিন পর বিজিএমইএ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন এস এম মান্নান কচি।
গত শনিবার রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত সংগঠনের পর্ষদের বৈঠকে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়। তার জায়গায় নতুন সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন পরিচালক খন্দকার রফিকুল ইসলাম।