শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ বন্যার মধ্যেই ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত। সোমবার (২৬ আগস্ট) এই বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়া হয়। ফলে একদিনেই বাংলাদেশে ঢুকছে ১১ লাখ কিউসেক পানি। বাঁধ খুলে দেয়ায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশেও। দেশের বিশেষ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রবল বৃষ্টি আর বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে পানি ছাড়ার কারণে চাপ বাড়ছে ফারাক্কা ব্যারেজে। তাই ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় দৈনন্দিন পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। যদিও বাকি সময়ে আপ স্ট্রিমে পানি যেমন থাকে সেই অনুযায়ী পানি ছাড়া হয় ডাউনস্ট্রিমে। গঙ্গার পানির স্তর বৃদ্ধির কারণে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের খবর, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় এবং ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সমস্ত গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যে পরিমাণ পানি আসছে, সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৭৭.৩৪ ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করেছে। ফারাক্কা ব্যারেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভারত পানি ছেড়ে দিয়েছে।
ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত। সোমবার এ গেট গুলো খুলে দেওয়া হয়। এতে একদিনে বাংলাদেশে ঢুকবে ১১ লাখ কিউসেক পানি। এই গেট খুলে দেওয়ায় দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নদ-নদী বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন বলেন, ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার খবরটি আমাদের জন্য বিপদজনক। এর ফলে দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয়, এখনও নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা ব্যারাজ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি সোমবার ১৬ দশমিক ২৯ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পয়েনেট বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। পদ্মার চাঁপাইনবাবগঞ্জ পাঙ্খা পয়েন্টে সোমবার প্রবাহিত হওয়া পানির গভীরতা হচ্ছে ২০ দশমিক ৪৮ মিটার উপর দিয়ে। এ পয়েন্টে বিপদসীমা হচ্ছে ২২ দশমিক ০৫ মিটার।