সর্বশেষ সংবাদ :

দুই দিনের বৃষ্টিপাতে জনজীবনে স্বস্তি, আমন চাষিদের মূখে হাসি

জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম: দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে ভরা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় অধিকাংশ আমন চাষি সেচ ও শ্যালো-মেশিনের পানি দিয়ে আমনের চাষাবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই সাথে টানা দুই সপ্তাহ ধরে প্রখর রোদ ও তীব্র তাপদাহ জনজীবনেও এসেছে অস্বস্তি।
এমন পরিস্থিতির মাঝে বৃষ্টির দেখা পাওয়ায় সাধারণ মানুষসহ আমন চাষিদের মাঝে সব থেকে বেশি স্বস্তি ফিরেছে। ফলে কিছু এলাকায় সামান্য জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ সৃষ্টি হলেও শ্রাবণে বৃষ্টি হওয়ায় অ লের কৃষির জন্য বড় আর্শীবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে।
দুইদিনের বৃষ্টিতে আমন খেতের জমিগুলো ভরে যাওয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে। শুধু আমান ধানেই নয় প্রাণ ফিরে পেয়েছে সুপারীসহ বিভিন্ন ধরণের সবজির ক্ষেতের। তাই বৃষ্টিতে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক-কৃষানীদের মাঝে স্বস্তির বার্তা দেখা গেছে। দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে আমন খেতে তরতাজা হয়ে উঠেছে।
তবে এ বৃষ্টি আর্শিবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে এ জনপদের আমন ধান ও শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির ক্ষেত। ভারী বৃষ্টিপাতে হাজার হাজার কৃষকের মন ভরে গেছে।
উপজেলার গজেরকুটি এলাকার কৃষক ও কুরুষাফেরুষা এলাকার কৃষক সিদ্দিক খন্দকার জানান, আমন আবাদটা কৃষকের অনেক লাভজনক ফসল। তাই বৃষ্টিপাত না হলেও আমরা সঠিক সময়ে সেচ ও শ্যালো-মেশিনের পানি দিয়ে আমনের চাষাবাদ করতাম। তবে এ বছর ভরা আমন মৌসুমে শেষের দিকে বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় আমরা সেচের পানি দিয়ে বোরো ধানের মতো ব্যয় করে আমনের চাষাবাদ করেছি।
এই দুই কৃষক আরও জানান, গত দুই তিন দিন সপ্তাহ ধরে চাষিরা শ্যালোমেশিন ও সেচ দিয়ে আমন খেতে পানি দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন। শুধু তারাই নন উপজেলা জুড়ে শতশত কৃষক ফসল রোপন ও ফসল রক্ষার্থে সেচের পানি ব্যবহার কওে আসছেন। হঠাৎ দুই দিনের টানা বুষ্টিপাত হওয়ায় আমন ক্ষেতে বৃষ্টির পানি দেখে সত্যিই কৃষকদের মন ভরিয়ে গেছে।
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা এলাকার আমিনুল ইসলাম ও নাওডাঙ্গা এলাকার আব্দুল হানিফ জানান,কয়েক সপ্তাহ থেকে এ অ লে প্রখর রোদ ও তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিপাত হওয়ায় অনেক স্বস্তি এসেছে।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার কৃষ্টি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে ৫২.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা আগামী ২৪ ঘন্টাও মাঝারী থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন জানান, চলতি আমন মৌসুমে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রীড জাত ১৫ হাজার ৬০০ হেক্টর, উফশী ৯৭ হাজার ৫০০ হেক্টর এবং স্থানীয়জাত ৭ হাজার ৪১০ হেক্টর।
উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩৮৪ মেট্রিকটন। আমনের চাষাবাদ চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৬৫ হাজার হেক্টর। গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।


প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৪ | সময়: ৪:৪২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ