রবিবার, ৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: বাগমারায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তির কাছে টিকতে পারেনি কোটা বিরোধীরা। শেষ পর্যন্ত তারা ধরাশায়ী হয়েছে। বাগমারা আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন বেশি শক্তিশালি ও সংগঠিত এমনটাই দাবী করেছেন রাজশাহীর বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ও বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাতি এ্যাড. জাকিরুল ইসলাম সান্টু।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলা উপজেলা মাসিক সমন্ময় সভা ও আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমন দাবীর কথা তুলে ধরেন এই দুই নেতা। তারা বলেন, বিগত ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে বাগমারায় নৌকা প্রতীক নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বিজয়ী হলেও তখন থেকেই বাগমারায় বিভক্তির রাজনীতি শুরু হয়।
আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হতে শুরু করে। এখানে দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী ছত্রছায়ায় জামায়াত বিএনপি লালন পালন ও সমৃদ্ধ হতে থাকে। এতে আওয়ামীলীগের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও দূরত্ব বাড়তে থাকে।
এ কারণে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য তৃণমূল আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত করে সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে নেমে পড়েন অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ও এ্যাড জাকিরুল ইসলাম সান্টু। এরই ধারবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে নৌকার মাঝি পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে মনোনয়েন দেন শেখ হাসিনা।
আবুল কালাম আজাদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। পরবর্তীতে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ্যাড জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সমর্থন দেওয়া হলে তিনিও বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। রাজনীতিতে কালাম- সান্টু গুরু শিষ্য। বাগমারায় শুরু হয় গুরু শিষ্যের রাজনীতি। বাগমারায় দীর্ঘদিন যেসব ত্যাগি ও নিবেদিত আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা মূল্যায়ন পাননি তাদের এখন মূল্যায়ন করা শুরু হয়। ফলে আওয়ামী লীগ এখানে নতুন শক্তিতে জেগে ওঠে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতা কর্মীরা জানান, গত জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে দেশব্যাপি কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে তারও প্রভাব এসে পড়ে বাগমারায়।
বাগমারা থেকে অনেক জামায়াত বিএনপি ও শিবির ক্যাডার এবং অতি কুখ্যাত জেএমবি ক্যাডাররা ঢাকায় গিয়ে নাশকতা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস যজ্ঞে মেতে ওঠেন।
এদিকে তাদের অনুসারিরাও বাগমারাতে অনুরুপ ধ্বংস ও নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামার চেষ্টা করলে শুরুতেই নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করেন এমপি আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড জাকিরুল ইসলাম সান্টু। তাদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় বাগমারায় গতমাসের ১৮ জুলাই কোটা বিরোধীদের বিক্ষোভ মিছিল ও ধ্বংস যজ্ঞের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়। এ দিন মাঠে থেকে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন কালাম-সান্টু।
এ দিনে কোটা বিরোধী আন্দোলনে জড়িত স্থানীয় ও বহিরাগত কিছু ক্যাডার বাহিনী ভবানীগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করলে কালাম-সান্টুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ তা প্রতিহত করে। এ সময় ভবানীগঞ্জ বাজার জিরো পয়েন্ট থেকে চার বিক্ষোভকারীকেও আটক করতে সক্ষম হয় বাগমারা থানা পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে দৈনিক সানশাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ্যাড জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, দেশকে পিছনের দিকে ঠেলে দিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে জামায়াত বিএনপি এই নাশকতাকে উসকে দিয়ে চলেছে। তারা কোমল মতি ছাত্রদের কাঁধে বন্দুক রেখে শেখ হাসিনাকে নিশানা করেছে। আমরা বাগমারা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ আছি। প্রয়োজনে শেখ হাসিনার জন্য শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে লড়াই করে যাব।
প্রায় একই অভিমত ব্যক্ত করে স্থানীয় সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশে জননেত্রী শেখ হাসিনরা কোন বিকল্প নেই। তার নেতৃত্বে আমরা ঔক্যবদ্ধ আছি। আগামীতেই থাকব এবং শেখ হাসিনার নির্দেশে যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত।