নাশকতার খড়গ পড়েছে আমচাষিদের মাথায়

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: আমের ফলন কম ছিল। তবে দাম ছিল বেশি। আমচাষিদের পুষিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি দেশব্যাপি নাশকতায় আমচাষিদের মুখের হাসি ম্লান করে দিয়েছে। লোকশান গুনতে হয়েছে শত শত কোটি টাকা। মৌসুমের শেষে আমের চাহিদা তুঙ্গে থাকার পরেও আম বিক্রি করতে পারেননি চাষিরা। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে পরিবহন বন্ধ থাকায় আম বিক্রি করতে পারেননি তারা। বাগানেই ঝরে পড়েছে অনেক চাষির আম। সব মিলিয়ে নাশকতার খড়গ নেমে এসেছে আমচাষিদের মাথায়।
আম চাষিদের সঙ্গে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবহাওয়ার কারণে এবার আমের ফলনে বিপর্যয় ঘটেছে। তবে দাম ভালো ছিল। শেষ সময় ভালো দাম পেলে কম ফলন হওয়ার বিষয়টি পুষিয়ে যেত লোকশান। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমচাষিদের সম্ভাবনাটুকুও হারিয়ে যায়।
শিবগঞ্জর আমচাষি কলিমুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে আমের ব্যবসাও করেন। সঙ্গে করেন আমের চাষও। প্রায় ১৪ বিঘা জমির ওপর ৫টি বাগান আছে তার। বড়গুলোয় আম ধরেনি বললেই চলে। তিনি জানান, বাগানে মোটামুটি চলার মতো আম হয়েছে। শুরুর দিক থেকে বেশি দাম বিক্রি করেছি। কিন্তু শেষ দিকে এসে আমের দরপতন শুরু হয়েছে। যেখানে তারা বেশি দাম পায় মৌসুমের শেষে কিন্তু আন্দোলনের কারণে চিত্র উল্টো। অনেক আম বাগানেই নষ্ট হয়েছে। বাজারে ক্রেতা না থাকায় আমও নামাতে পারিনি।
আরেক আম চাষি দুলাল জানান, পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ক্রেতাশূণ্য হয়ে পড়ে আমের বাজার। চাষিরা চেষ্টা করে গাছে আম রেখে দিতে। কিন্তু সে চেষ্টা করেও অনেকে পেরে উঠেনি। গাছেই পেকেছে আম। হঠাৎ পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড় সংকটে পড়তে হয়। অনেক আম কুরিয়ারেই পেকে পচে গেছে।
দেশের বৃহত্তম আম বাজার কানসাট। এই বাজারে চলতি মৌসুমে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা করে আমের বেচা-কেনা হয়েছে। কিন্তু কোটা আন্দোলনের ফলে আম পরিবহনের ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেচাকেনা কমে যায়।
আমচাষিরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে প্রতিদিন ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক আম যায় দেশের বিভিন্ন বাজারে। কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় ১০ দিন তা বন্ধ ছিল। এতে প্রতিদিন ২৩ থেকে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সে হিসেবে ১০ দিনে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার লোকশান হয়েছে। এছাড়াও কুরিয়ার ও অন্যান্য খাতে আম ব্যবসায় ক্ষতি ৫০ কোটি টাকার উপরে।


প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৪ | সময়: ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ