সর্বশেষ সংবাদ :

নেপথ্যে ‘চাঁদাবাজি’ হলেও বাঘায় বাবুলের লাশ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার : 
স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলা, সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ‘রহস্যজনক নিষ্ক্রিয়তা’র কারণে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের নিরাপত্তা বেস্টুনির অদূরে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে প্রকাশ্য-দিবালোকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা বাবুলের মাথায় ও ঘাড়ে এলোপাথারি কুপিয়ে ফেলে রেখে গেলেও কারো নজরে না পড়ার বিষয়টি রহস্যের জন্ম দিয়েছে।

 

এদিকে একই সময় ও স্থানে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে আগে থেকেই ছিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা। কিন্তু স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সংঘাত এড়াতে রহস্যজনক কারণে ওই স্থানে জারি করেনি ১৪৪ ধারা। শুধু তাই নয়; উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে যেখানে বাবুল এমন নৃশংস হামলার শিকার হয়েছেন তার অদূরেই একই স্থানে ছিল তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ইউএনও কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা এসব সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ না থাকায় প্রকৃত খুনি শনাক্ত করা নিয়েও জন্ম দিয়েছে ধোঁয়াশার।

 

অপরদিকে বাবুল হত্যাকাণ্ডের পেছনে দলিল লেখক সমিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের নগ্ন হস্তক্ষেপই দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সমিতির মাধ্যমে অতিরিক্ত চাঁদাবাজি আর ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের বলি বাবুল। মূলত বাবুল হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে এমপি শাহরিয়ার আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন দলিল লেখক সমিতির চাঁদাবাজি। তবে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে নিহত আওয়াম লীগ নেতার লাশ নিয়ে স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলম রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন।

 

সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত ২২ জুন দুই পক্ষের সংঘর্ষের নেপথ্যের কারণ উপজেলা দলিল লেখক সমিতির অতিরিক্ত টাকা আদায়। ২০১৯ সাল থেকে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম দলিল লেখক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঠিক করে দিচ্ছেন। এ কমিটির নেতারা দলিল লেখার সময় ক্রেতাদের কাছ থেকে লেখকদের অতিরিক্ত টাকা নিতে বাধ্য করে। গত ৯ জুন এমপি শাহরিয়ার আলম দলিল লেখক সমিতির নতুন সভাপতি হিসেবে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পাকুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শামিউল আলম নয়নের নাম লিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) খুদেবার্তা দেন। ক্ষুদেবার্তার বিষয়ে ইউএনও তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘উনি (এমপি) ৯ জুন দলিল লেখক সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের নাম মেনশন করে টেক্সট করেছিলেন। আমার কাছে অনেকেই অনেক কিছু পাঠাতেই পারেন।’ পরদিন ১০ জুন পিন্টু ও নয়ন দায়িত্ব নিতে গেলে দলিল লেখকদের একাংশের বিরোধিতার মুখে পড়েন। সেদিন দলিল লেখকদের সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। বাঘার ২২ জুনের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় সেদিনই। গত রবিবার (৩০ জুন) সারাদিন সরেজমিনে দলিল লেখক, স্থানীয় বাসিন্দা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

রবিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা চত্ত্বরের যে স্থানে গুরুতর আহত অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল পড়েছিল সেই স্থানটি অরক্ষিত ছিল। ওই স্থানে বাবুলের রক্ত শুকিয়ে কালো হয়ে গেছে, শুকনো কালো রক্তের ছাপে বসছে মাছি। কিন্তু ওই স্থানটি এখন আর ক্রাইম সিনের আওতায় নেই। যেখানে বাবুলকে কুপিয়ে ফেলে রাখা হয়েছিল তার পূর্বপাশে উপজেলা নির্বাচন অফিসের ভবনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরাটি ঘটনাস্থল কাভার না করলেও পশ্চিমপাশে ইউএনও কার্যালয়ে ফটকের সামনে একই স্থানে তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। যারা তাকে কুপিয়েছে সেই ঘটনা এসব ক্যামেরায় ধারণ করার কথা। কিন্তু ১ মে থেকে ক্যামেরার স্টোরেজ পূর্ণ হওয়ায় রেকর্ড নেই বলে জানান ইউএনও। ফলে প্রকৃত হামলাকারীকে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যদিও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১ নম্বর আসামি মেয়র আক্কাস আলী ও ২ নম্বর আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল তাদের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে বাবুলকে কুপিয়েছেন।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, দলিল লেখক সমিতির কমিটি আগে নির্বাচিত হতো। ২০১৯ সাল থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মো. শাহরিয়ার আলম মৌখিকভাবে সমিতির কমিটি করে দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত চারটি ‘পকেট কমিটি’ করে দিয়েছেন সংসদ সদস্য। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দলীয় পদধারী নেতারাই এসব কমিটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁরা সবাই সংসদ সদস্যের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সমিতির সাবেক সভাপতি জহুরুল হকসহ ৬৯ জন দলিল লেখক গত ১২ মে বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, দলিল লেখকদের বাধ্য করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এতে জমি রেজিস্ট্রি কমে যাচ্ছে। রাষ্ট্র রাজস্ব হারাচ্ছে।

পৌর মেয়র আক্কাস আলী, উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন লাভলু ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলামসহ তাদের অনুসারিরা দলিল লেখক সমিতির এই চাঁদাবাজির বিরোধিতা করে আসছিলেন। নতুন কমিটির বিরোধিতা নিয়ে ১০ জুন দলিল লেখকদের দুপক্ষের সংঘর্ষের পর ২০ জুন একাংশ মানববন্ধন করে। মেয়র আক্কাস, উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েব ও ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজ এতে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন। পরে ২২ জুন দলিল লেখক সমিতির দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে তারা বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দেন। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে একই দিন মেয়র আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধনের ডাক দেয় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন বা ইউএনও এনিয়ে আগে থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

 

উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মুখোমুখি কর্মসূচি দেখে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করতে চেয়েছিল। কিন্তু এমপি ও তার অনুসারিরা জেদ ধরেন যে, মেয়রের বিরুদ্ধে কর্মসূচি হবেই। রাজনৈতিক চাপের কারণেই ১৪৪ ধারা দেওয়া যায়নি।’ জানতে চাইলে ইউএনও তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৪৪ ধারা না দিলেও আমরা পুলিশ প্রস্তুত রেখেছিলাম। থানার পাশাপাশি জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে আগের রাতেই অতিরিক্ত ৩০ জন পুলিশ সদস্য আনা হয়েছিল।’

 

কিন্তু পুলিশ এই সংঘাত নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শীদের। এজন্য বাবুলের মৃত্যুতে এখন পুলিশ-প্রশাসনকেই দায়ী করছেন সবাই। উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘কর্মসূচির ব্যাপারে পুলিশকে আমরা অবহিত করেছিলাম। পুলিশ বলেছিল, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে। কিন্তু পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে।’ নিহত বাবুলের ছেলে আশিক জাভেদ বলেন, ‘পুলিশের ব্যর্থতার কারণে আমার বাবার প্রাণ গেছে।’

 

মেয়র আক্কাসপক্ষের এক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেখে সংঘাতের আশঙ্কায় তিনি ১৪৪ ধারা দিতে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ফোন করেছিলেন। ১৪৪ ধারা না দিয়ে তাঁকে বলা হয়েছিল, পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে। কিন্তু জেলা থেকে পুলিশ আনা হয়েছিল মাত্র ৩০ জন। এই পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারেনি।’

 

২২ জুন সকালে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে মেয়রের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই পড়েছিল হেলমেট। বস্তায় করে তারা ইটপাটকেল ও লাঠিশোটা এনেছিলেন। মেয়র আক্কাসসহ তার অনুসারিরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সামনে এলে উপজেলা চত্বরের ভেতর থেকে তাদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। পাল্টা জবাব দিয়ে মিছিলটি সামনে এগিয়ে আসতে থাকে। তারা উপজেলা চত্বরের সামনে এলে মানববন্ধনের লোকজন ভেতরে ঢুকে যায়। প্রধান ফটক দিয়ে সোজা রাস্তা দিয়ে ঢুকলেই হাতের বাঁয়ে মৎস্য অফিস, এরপর ইউএনওর কার্যালয়। ইউএনওর কার্যালয়ের পর অব্যবহৃত নতুন উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন। এর সামনের ফাঁকা স্থানটিতেই গুরুতর আহত অবস্থায় পড়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল। কিন্তু তাকে কে কুপিয়েছেন তার প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যাচ্ছে না।

 

মামলার বাদি ও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি পিন্টু বলেন, ‘আক্কাসের লোকজনের হামলায় আমরা উপজেলার ভেতরে ঢুকে কেউ ইউএনওর বাসভবনের সামনে আবার কেউ প্রাচীর টপকে থানায় গিয়ে আশ্রয় নিই। বাবুলের ধারণা ছিল তাকে কেউ মারবে না, কিন্তু মেরেছে। আমরা সরাসরি কোপাতে দেখিনি। তবে হামলাকারীরা যখন বেরিয়ে যাচ্ছিল, তখন তাদের দেখেছি।’

 

একই কথা বললেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহিদ সাদিক কবির। তিনি বলেন, ‘গেটের সামনে কারা যেন একটা ককটেল মারে। ফলে গেট থেকে পুলিশ একটু দূরে সরে যায়। এরপর হামলাকারীরা ভেতরে ঢুকে বাবুলকে কোপায়। আমরা প্রাচীর টপকে থানায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। পরে ওসি আমাকে ফোন করে বলেন যে, বাবুল পড়ে আছেন। তখন আমরা এসে একটা মোটরসাইকেলে তুলে বাবুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

 

নিহত বাবুলের স্ত্রী জরিনা খাতুন বেবী জানান, আহত হওয়ার পরদিন বাবুলের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছিল। তখন তিনি হামলাকারীর সম্পর্কে জানতে স্বামীকে প্রশ্ন করেছিলেন। বাবুল তাকে জানিয়েছিলেন, হামলাকারীকে তিনি চেনেন না। তবে তাকে দেখলে চিনতে পারবেন।

 

এদিকে চারদিন পর হাসপাতালে মারা যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল। ২৭ জুন জানাজা নামাজে বাবুলের লাশ সামনে রেখে এমপি শাহরিয়ার আলম হত্যার পেছনের মদদদাতা হিসেবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটির মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান আসাদকে দায়ী করে বক্তব্য দেন। ওই জানাজা থেকে বের করে হয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকারকেও।

 

শাহরিয়ারের ওই বক্তব্যের পর লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এসব ঘটনায় আমার সম্পৃক্ত হওয়ার কোন কারণ নেই, সুযোগও নেই। মনে হচ্ছে রাজনীতি করতে শাহরিয়ারের একটা লাশের প্রয়োজন ছিল।’ সংঘর্ষের সময় সবাই বাবুলকে কেন একা ফেলেন গেলেন এবং কেন এমপি শাহরিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিলেন না সে প্রশ্ন তুলে লিটন অনুসারী নেতাকর্মীরা শহরে একাধিক কর্মসূচি পালন করেছেন। তারাও বাবুল খুনের বিচার চেয়ে এমপি শাহরিয়ারকে রাজশাহী শহরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি লিটন-আসাদকে জড়িয়ে দেওয়া বক্তব্য প্রমাণ করতে শাহরিয়ারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। এর পর থেকে এমপি শাহরিয়ার নিশ্চুপ।

 

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আগে থেকেই দুই ধারায় বিভক্ত। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাস আলী, যুগ্ম সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ও এমপি আসাদের অনুসারি হিসেবে পরিচিত। সেই কারণে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে লিটন-আসাদকে জড়িয়েছেন শাহরিয়ার।

 

তবে স্বামীর লাশ নিয়ে রাজনীতি চান না নিহত বাবুলের পরিবার। এসব দলাদলির কারণে বাবুলের প্রকৃত খুনিরা আড়ালে চলে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের। গত রবিবার (৩০ জুন) বিকালে বাঘার গাওপাড়ায় নিজ বাড়িতে বাবুলের স্ত্রী জরিনা বেগম প্রতিবেদককে বলেন, ‘লিটন ভাই ও আসাদ ভাইয়ের সঙ্গে বাবুলের কোন দ্বন্দ্ব ছিল না। একসময় আমার স্বামী তাদের সঙ্গেই রাজনীতি করতেন। সবার সঙ্গেই আমাদের ভাল সম্পর্ক ছিল। তাদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল না।’

 

বাবুলের বড় ছেলে আশিক জাবেদ বলেন, ‘লিটন-আসাদ ইস্যুতে এখন আলোচনা ভিন্নদিকে ঘুরে গেছে। এতে আমার বাবার প্রকৃত খুনিরা আড়ালে চলে যেতে পারে। আমরা এ বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাঘা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শোহেব খাঁন বলেন, ‘বাবুল হামলার ঘটনা ঘটেছে উপজেলা চত্ত্বরের ভেতরে। আর আমরা ছিলাম উপজেলা চত্ত্বর থেকে দূরে রাস্তায়। সঙ্গত কারণে তাকে কারা কুপিয়েছে এখনো জানা যায়নি। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে আমি বলবো, প্রকৃত হামলাকারী কারা তাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’

 

পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে। অন্য আসাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ ওই দিন যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেছে এবং এটি একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ওই দিন সঠিকভাবেই দায়িত্ব পালন করেছে।’

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৪ | সময়: ৭:০৩ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine