সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় দলিল লেখক সমিতির আধিপত্য নিয়ে সংঘাতের পর এবার মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: রাজশাহীর বাঘায় দলিল লেখক সমিতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষের ১০ দিন পর, এবার মানব বন্ধন করেছে একটি পক্ষ। বৃহস্পতিবার সকালে তারা অবিলম্বে এই সমিতি বাতিলের দাবি জানিয়ে উপজেলা সদরে মানব বন্ধনসহ প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। তবে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরে অভিযোগ করেননি তারা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বাঘা পৌর মেয়র আক্কাছ আলী বলেন, প্রিয় বাঘাবাসী আপনারা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন, গত ১০ জুন উপজেলা দলিল লেখক সমিতির পদ পরিবর্তন ও একক ভাবে অবৈধ পন্থায় দলিল লেখক সমিতির নামে জমি রেজিস্ট্রি ফি বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। আমি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই, আমাদের সংসদ সদস্য যখন তখন তাঁর পছন্দের লোকদের সমিতির দায়িত্ব দিয়ে অবৈধ ভাবে টাকা রোজগার করিয়ে থাকেন। এরপর সেই টাকা তার সমর্থীত দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যয় করেন। এর ফলে একদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হন সরকার।
অন্যদিকে লাভবান হন কতিপয় দলিল লেখক সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। আমরা অবিলম্বে এই অরাজকতার পরিবর্তন চাই। তা না হলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বাঘার সর্বস্তরের জনগণের বরাত দিয়ে ডাকা এই মানব বন্ধনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন, নব-নির্বাচিত বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জাসদ নেতা শফিউর রহমান শফি, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান (সদ্য) আব্দুল মোকাদ্দেস, বাঘার পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, বাঘা পৌর আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন চকরাজাপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, অধ্যাপক সানোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এদিকে মানব বন্ধনের উদ্ধৃতি টেনে কথা বললে, বর্তমান দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন সরকার বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে মাত্র ১০৬ ভোটের ব্যবধানে তাদের সমর্থীত প্রার্থী অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তারা আমাদের পেছনে লেগেছে। এই মানব বন্ধনের আদৌ কোন যুক্তিকতা নেই। কারণ এটি সারা দেশে চলমান। বরং অন্য উপজেলার চেয়ে আমাদের এখানে জমি-কেনা বেচায় ফি কম নেয়া হয়।
তারা আরো বলেন, প্রতিপক্ষরা মানব বন্ধনে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্যকে নেড়ে যেসব কথা বলেছে তার কোন ভিত্তি নেই। কারণ চারঘাট-বাঘার মানুষ ভালো করেই জানেন, শাহরিয়ার আলম চারবারের নির্বাচিত সংসদ এবং দু’বারের সফল সাবেক পররাষ্ট্র পতিমন্ত্রী ও একজন পরিক্ষিত নেতা। তাঁর বিরুদ্দে রাষ্ট্রীয় ভাবে কোন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ নেই। বরং যারা মানব বন্ধন করেছে, তাদের মধ্যে কতিপয় নেতার বিরুদ্ধে অজস্র দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই মানব বন্ধনে দলিল লেখক সমিতির তেমন কোন সদস্য উপস্থিত ছিল না বলেও উল্লেখ করেন তারা।
উল্লেখ্য গত ১০ জুন রাজশাহীর বাঘায় দলিল লেখক সমিতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়। ঐদিন দুপুরে উপজেলা সদরে অবস্থিত সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক পর্যায় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার আমি রাজশাহীতে একটি মিটিং-এ ছিলাম। একটি পক্ষ সমিতি বাতিলের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে এমনটি শুনেছি। তবে তারা কোন লিখিত অভিযোগ করেনি।


প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৪ | সময়: ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর