ই-পেপার
সর্বশেষ সংবাদ :

পুকুরে ছড়িয়ে পড়ছে সাকার মাছ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর বাঘায় একটি পুকুরে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির তিনটি সাকার মাছ। শনিবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দিঘা নওদাপাড়া গ্রামের জমির উদ্দিনের পুকুরে মাছ তিনটি ধরা পড়ে। দেশের অধিকাংশ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষতিকর সাকার মাছ। সাকার মাছ জীববৈচিত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। মাছটি অন্য মাছের লার্ভা ও ডিম খেয়ে ফেলে।
সাকার ফিশের আসল নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। এর বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকাসটোমাস। আশির দশকে অ্যাকোয়ারিয়ামের শেওলা ও ময়লা পরিষ্কার করতে এই মাছ বিদেশ থেকে আনা হয়। এই মাছ দক্ষিণ আমেরিকায় ব্যাপকভাবে দেখা যায়। তবে কয়েক বছর ধরে তা ভারত, চীন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের জলাশয়ে দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী এ মাছের দখলে চলে গেছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সাকার মাছ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বা খারাপ পানিতে ও কম অক্সিজেনেও বাঁচতে পারে। পাশাপাশি এটি দ্রুত প্রজনন ঘটায়। এছাড়াও অন্যান্য মাছের লার্ভা ও ডিম খেয়ে ফেলে। খাবার নিয়েও চলে প্রতিযোগিতা। এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে দেশীয় মাছ টিকে থাকতে পারে না। তাই সাকার মাছ দেশের বিভিন্ন মাছের জন্য হুমকিস্বরূপ।
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন, পুকুর প্রস্তুতের সময় তা শুকিয়ে সব সাকার ধরে মেরে ফেলতে হবে। বন্যা বেশি হওয়ায় পুকুরের চারপাশে জাল দিয়ে রাখতে হবে যেন সাকার পুকুরে প্রবেশ করতে ও বের হতে না পারে। তবে পুকুর থেকে সরালেও নদ-নদী ও খাল-বিল থেকে এ মাছ সরানো কঠিন হবে বলে তারা মনে করেন।
বাঘায় যে পুকুর থেকে মাছটি পাওয়া গেছে তার মালিক জমির উদ্দিন বলেন, বাড়ি সাথে ছোট পুকুরে দেশীয় জাতের রুই, কাতল, তেলাপিয়া, মৃগেল ও নদীর ছোট ধানী পোনা মাছ ছাড়া হয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যার আগে এই মাছ ধরার জন্য জাল ফেলা হয়। এ সময় জালে বিরল প্রজাতির তিনটি মাছ পাওয়া যায়। এ ধরনের অপরিচিত মাছ দেখে হতবাগ হয়ে পড়ি। পরে মাছটি অন্যান্যরা দেখে ’সাকার’ মাছ হিসেবে চিহৃত করে।
লম্বাকৃতির কাঁটাযুক্ত শরীরে কোন আঁশ নেই, মুখটা বড়। কালো রংয়ের শরীরে হলুদ রংয়ের ছাপ রয়েছে। মাছ তিনটির ওজন এক কেজি হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাহাদুল ইসলাম বলেন, এটি রাক্ষুসে সাকার মাউথ ক্যাটফিস। এই রাক্ষুসে মাছ দেশীয় প্রজাতির জন্য হুমকি, এতে কোনো সন্দেহ নেই। যে জলাশয় কিংবা নদীতে এ মাছ থাকবে, সেখানে দেশীয় প্রজাতির মাছ খেয়ে ফেলে। এই মাছ দূষিত পানিতে টিকে থাকতে পারে। এই মাছের কাটা বেশি, মাংস কম, তাই মানুষ এগুলো খায় না। সাকার মাছ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কোথায় এ ধরণে মাছ পাওয়া গেলে মাটিতে পুতে ধ্বংস করতে বলা হয়েছে।


প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৪ | সময়: ৬:০০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ