শনিবার, ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: পুকুর খননের জমি ও পুকুর দখলের পর বাগমারায় এবার লাঠিয়াবাহিনীর বিরুদ্ধে লাল নিশানা টাঙ্গিয়ে মৎস্যচাষিদের বিল দখলের অভিযোগ ওঠেছে। খবর পেয়ে থানা ও হাটগাঙ্গোপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক বাঁশের লাঠি উদ্ধার করেছে।
বিল দখলে নিতে নাশকতার উদ্দেশ্যে বাহিনীর প্রধান মজিবর রহমানের ভাগিনা দুলাল উদ্দিনের বাড়িতে লাঠিগুলো মজুদ রাখা হয়েছিলো বলে পুলিশ জানিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে বুধবার থেকে বিল সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
জানা গেছে, নরদাশ ইউনিয়নের হাতিয়ার বিলে কৃষকদের জমিতে বিনা খরচে সেচ সুবিধা দিয়ে প্রায় ১৫ বছর ধরে ‘হাতিয়ার বিল মৎস্য চাষ প্রকল্পের’ আওতায় মৎস্যচাষিরা পরিকল্পিত পদ্ধতিতে মাছচাষ করে আসছেন। জমিতে বিনা খরচে সেচ সুবিধা দেওয়া ছাড়াও মাছ চাষের বিনিময়ে কৃষকদের প্রতি শতক জমির ভাড়া বাবদ বার্ষিক ৬০০ টাকা হারে দেওয়া হয়। এই ধরনের সুবিধা পাওয়ায় বিলসংলগ্ন ৭-৮টি গ্রামের প্রায় পাঁচশতাধিক কৃষক ৩০০ টাকা মূল্যের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে লিখিতভাবে ‘হাতিয়ার বিল মৎস্য চাষ প্রকল্পের’ আওতায় মৎস্যচাষিদের মাছ চাষের জন্য অনুমতিও দিয়েছেন।
প্রকল্পের সভাপতি তমেজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন জানান, নরদাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মজিবর রহমান, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল মতিন ও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন লাঠিয়াল বাহিনী হাতে বাঁশের লাঠি ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মঙ্গলবার হাতিয়ার বিলের মধ্যে লাল নিশানা টাঙ্গিয়ে দিয়ে মহড়া দেয় এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মৎস্যচাষিদের বিলটি জোরপূর্বক দখল করে নেয়।
এ বিষয়ে লাঠিয়ালবাহিনীর প্রধান নরদাশ ইউনিয়ন আ.লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মজিবর রহমান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে কিছু লোকজন প্রায় ১৫ বছর ধরে বিলটি দখল করে রেখেছেন। তাই বিলটি উদ্ধারের জন্য লাল নিশানা টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, একটি পক্ষ বিলের মধ্যে লাল নিশানা টাঙ্গিয়ে দিয়ে মৎস্যচাষিদের বিল দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। খবর পাওয়া মাত্র অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।