বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী অঞ্চলে জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানীর হাটগুলো। পাইকার ও সাধারণ ক্রেতাদের ভিড়ে বেড়েছে। খামারের গরুগুলো খামারিরা হাটে তুলতে শুরু করেছে। কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় প্রস্তুত প্রায় ৪১ লাখ গবাদি পশু। এই বিভাগের কুরবানির পশুর চাহিদা অনুযায়ী ২৫ লাখ পশু রেখে বাকি ১৬ লাখ দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে। গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবার হাটে গরুর দাম গতবারের তুলনায় বেশি। খামার মালিকরা জানান, খাবারের দাম বেশি থাকায় পশু পালনে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। দাম বেশি না থাকলে লোকসান হবে।
শুক্রবার রাজশাহী ও নওগাঁর সীমান্তে চৌবাড়িয়ায় বড় গরু হাট বসেছিল। বিপুল পরিমান গরু উঠেছিলো ওই হাটে। দুরের পাইকাররা গরু কিনতে এসেছিল। ওই হাটে গরু কিনতে যান রাজশাহী মহানগরীর বড় বনগ্রাম চকপাড়া এলাকার মোকলেসুর রহমান। ৭৬ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানীর জন্য একটি গরু কিনেন তিনি। মোকলেসু রহমান জানান, গতবারের তুলনায় হাটে গরুর দাম একটু বেশি। বাজারের দুরের পাইকার নামাতে খামারিরা দাম হাঁকাচ্ছেন বেশি।
চৌবাড়িয়া হাট ঘুরে দেখা যায়, ৮০ কেজি ওজনের ষাঁড় বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকায়। ১২০ কেজি ওজনের ষাঁড়গুলো বিক্রি হচ্ছে ৯৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকায়। ২০০ কেজি বা তার বেশি ওজনের ষাঁড়গুলো বিক্রি হচ্ছে এক লাখ ৯০ হাজার থেকে শুরু করে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকায়।
রাজশাহী জেলার পবা থানার বাগধানী এলাকার খামারী আফজাল মাস্টার জানান, তার ২টি গরু রয়েছে কোরবানীর ঈদে বিক্রি করার জন্য। তিনি আশা করছেন গরু দুটো আড়াই লাখ টাকার উপরে দাম হবে। বাড়িতে পাইকার এসে দাম করেছে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা। এ দামে বিক্রি করলে খুব বেশি লাভ হবে না বলে জানান তিনি।
পশু পালনকারীরা বলছেন, এবছর খাবারের দাম বেশি থাকায় পশু পালনে ব্যয় বেড়েছে ২০ শাতংশ। তাই দাম বেশি না থাকলে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। গোখাদ্যের ও মাংসের দাম বাড়লেও খামার মালিকরা লাভবান হতে পারছে না। মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভের টাকা পাচ্ছে। সারা বছর ধরে গরু পালন করলেও প্রত্যাশিত লাভে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আব্দুল হাই সরকার জানান, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় ২৫ লাখ পশুর চাহিদার বিপরীতে ৪১ লাখ পশু প্রস্তুত রয়েছে। বাকি ১৬ লাখ দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে। সেইসাথে কুববানির পশুকে অধিক লাভের আশায় দ্রুত মোটাতাজা করণের ইনজেকশন বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে খামারিদের সচেতন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহুম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, এবছর রাজশাহী বিভাগের চাহিদার তুলনায় কুরবানির পশু বেশি থাকায় ন্যায্য মূল্য থাকবে। এছাড়া রাস্তার ধারে কোন হাট বসতে দেয়া হবে না। কেউ যদি পশুকে অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার খাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।