খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনকারী অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে: ভোক্তা ডিজি

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন ব্যতীত যেসব প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করছে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। এজন্য সারা দেশেই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে রাজশাহীর সাহেববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বাজার মনিটরিং অভিযান পরিচালনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘ভোক্তাদের সঙ্গে যারা প্রতারণা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এগুলো শক্তভাবেই দেখা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে আম ও লেবুর দাম অনেক কম। এখানে এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। অথচ ঢাকায় এই লেবু ৫০ থেকে ৬০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকায় মধ্যস্বত্বভোগীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তাদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্যও কাজ করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ’
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যারা মসলা মজুদ রেখে বাজার অস্থিশীল করবেন তাদের বিরুদ্ধেও শক্ত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে সামনের দিনে অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন ভোক্তার ডিজি।
এর আগে রাজশাহীর বাজার মনিটরিংয়ে গিয়ে অনুমোদনহীন খোলা সেমাই বিক্রির অভিযোগে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানের সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ভেজাল পণ্য বিক্রি না করার বিষয়ে দোকানিদের আবারও সতর্ক করেন।
এদিকে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বাস্তবায়ন ও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আয়োজনে বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের রবিবার দুপুরে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র বোর্ড রুমে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাসুদুর রহমান রিংকু, সভাপতি, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, রাজশাহী। সভায় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তারা ভোক্তা অধিকার কর্তৃক অভিযান পরিচালনার সময় সৎ ব্যবসায়ীরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ জানান। এ সময় রাজশাহী চেম্বারের পরিচালক আব্দুল গাফফার বলেন, শতকরা ৫ ভাগ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত অথচ ৯৫ ভাগ ব্যবসায়ীরা বদনামের শিকার হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, তারা কোম্পানী থেকে অষুধ কেনার সময় একবারে টাকা পরিশোধ করে অষুধ কিনে আনেন কিন্তু কোন কারণে ঔষধ বিক্রি না হলে ঔষধ কোম্পানিগুলো তা ফেরত নিতে গড়িমসি করে থাকে। উপস্থিত একজন বক্তা রাজশাহীতে পর্যাপ্ত স্লটার হাউস নির্মানের বিষয়ে মহাপরিচালক মহোদয়কে সহযোগীতার অনুরোধ জানান। প্রধান অতিথি এএইচএম সফিকুজ্জামান সকল ব্যবসায়ীকে যারা ব্যবসায় অনিয়ম করছে তাদের তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য অনুরোধ জানান।
পরিশেষে, চেম্বার সভাপতি জনাব মাসুদুর রহমান রিংকু ব্যবসায়ী মহলকে আরো নৈতিক বা আদর্শিক দিকটিকে প্রাধ্যান্য দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার অনুরোধ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, পরিচালক,কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ইব্রাহীম হোসেন, উপপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়, মাসুম আলী, সহকারী পরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী জেলা কার্যালয়। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সাদরুল ইসলাম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, পরিচালকবৃন্দ রিয়াজ আহমেদ খান, সাদরুল ইসলাম, আব্দুল গাফফার, নাজমুল হোসেন, মামুনার রশীদ এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ।


প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৪ | সময়: ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ