রবিবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
আদমদীঘি প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘিতে রান্না করা খাবারে ছাগলের বিষ্ঠাসহ ময়লা আবর্জনা ফেলে দিয়ে প্রায় শতাধিক মানুষের আহার নষ্ট করে দিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। ঘটনাটি বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্তে আসেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়ামিন।
বুধবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা পশ্চিমপাড়া গ্রামে ঘটনাস্থলে তদন্তে এসে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ, ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান সহ শতাধিক জনসাধারণ।
জানা যায়, আদমদীঘিতে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ২য় ধাপের নির্বাচন ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। এই উপলক্ষে আচরণবিধি বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডিউটি করছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। গত রবিবার রাতে সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামের প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ চাল ও চাঁদা তুলে পিকনিকের আয়োজন করছিলেন। সেখানে আনারস প্রতীকের সমর্থক একই এলাকার সাধারণ ভোটারগণ একত্রিত হয়ে খাওয়ার জন্য খিচুড়ি পাক করে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক লোকজন দেখে গাড়ি থামিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কথাপ্রসঙ্গে তাঁর গাড়ির চালক হয়রত আলীকে রাস্তার আবর্জনা উঠিয়ে খিচুড়ির ডেক্সির ভিতর দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এসিল্যান্ডের নির্দেশ পেয়ে ড্রাইভার সঙ্গে সঙ্গে রান্না করা খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছিটিয়ে দেয়। এতেকর সেদিন আর তাদের খাবার খাওয়া হয়নি। না খেয়ে অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েন।
এ ঘটনাটি বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার (২২ মে) দুপুরে তদন্তে আসেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়ামিন। তদন্তে ঘটনাস্থলে এসে ওই গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপর ওই গ্রামের নিজাম উদ্দীন, নজরুল ইসলাম, ডালিম হোসেন তাঁর নিকট লিখিত বক্তব্য জমা দেন।
বক্তব্যে তারা উল্লেখ করেন, গত ১৯ মে কেশরতা গ্রামের প্রায় শতাধিক ব্যাক্তি নিজ নিজ বাড়ী থেকে চাল ও টাকা উত্তোলন করে পিকনিক খাচ্ছেন। তাদের রান্না শেষের দিকে কিছুক্ষণ পর খাবার খাবেন ঠিক সেই মূহুর্তে এসিল্যান্ড পুলিশ ফোস নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে কোন কিছু না শুনে খাবার মধ্যে আবর্জনা সহ ছাগলের গবর দিয়ে পাকের হাতা দিয়ে ঘেটে দেয়। নিরুপায় হয়ে সেদিন আর খাবার খেতে না পেরে অনাহারে বাড়ী ফিরে রাত্রি যাপন করেন। এই বিষয়টি তাঁরা প্রতিকার চায়।
আদমদীঘি ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বলেন, গরীবের খাবার যারা নষ্ট করে এর একটা উপযুক্ত বিহিত করা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়াসমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, খাবারে আবর্জনার সত্যতা পেয়েছি কেশরতা গ্রামের তিনজন ব্যাক্তির লিখিত বক্তব্য নিয়েছি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিব তাঁরা বিষয়টি দেখবেন।