শুক্রবার, ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় আরও ৬১ নেতাকে দলের সব ধরনের পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপে অংশ নেওয়া ১৪১ নেতাকে বহিষ্কার করল দলটি।
শনিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নতুন করে ৬১ নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়ে জানানো হয়। দলীয় সূত্র জানায়, আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য ২য় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপির যেসব নেতা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় বৃহস্পতিবার (২ মে) তাদের কারণ দর্শানো (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। পত্রপ্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে অংশ নেওয়ার শুরুতে ৭৩ জনসহ সবমিলিয়ে ৮০ জনকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
এদিকে বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জন করায় দলটির তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাকর্মী প্রথম ধাপের নির্বাচনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে যদি ভোট সুষ্ঠু হয় এবং বিএনপির বহিষ্কৃত নেতারা বিজয়ী হন তাহলে তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও বিএনপি থেকে প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে দলটিতে আলোচনা চলছে। তবে তৃণমূলের বাস্তবতা আসলে কতটা বিবেচনায় নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড, সেই আলোচনাও রয়েছে দলটির ভেতরে। সেইসঙ্গে গণহারে দল থেকে এই বহিষ্কার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে; এতে দল আরও দুর্বল হচ্ছে কি না, এসব প্রশ্নও রয়েছে বিএনপিতে। তবে কঠোর অবস্থানেই থাকছে দলটির হাইকমান্ড।
এ মুহূর্তে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে জোর আলোচনা, প্রথম ধাপের ফলাফল যদি বিএনপির চিন্তা-ভাবনার হিতে বিপরীত হয়, তখন বহিষ্কার বার্তাও পদধারী ও সাবেক নেতাকর্মীদের ভোটে অংশ নেওয়া থেকে কতটা বিরত রাখতে পারবে? একদিকে ভোটে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীর তালিকা বড় হবে, অন্যদিকে বহিষ্কার সংখ্যাও বাড়বে। তবে হাইকমান্ড শেষ পর্যন্ত কঠোর অবস্থানেই থাকছে বলেও জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী এবার কমবেশি ৪৮০ উপজেলা পরিষদে চার ধাপে ভোট হবে। প্রথম ধাপে ভোট হবে ৮ মে। এরপর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে, ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন হবে। ইতোমধ্যে সব ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপেও বিএনপি নেতাদের অনেকে প্রার্থী হতে আগ্রহী। ফলে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের অবস্থানে থাকা দলটির বহিষ্কারের সংখ্যা দীর্ঘ হবে। নেতাদের ধারণা, উপজেলা নির্বাচনের শেষ ধাপ পর্যন্ত বহিষ্কারের সংখ্যা আড়াইশ-তিনশ হতে পারে। যদিও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে কিছু নেতা বহিষ্কার হলেও তাতে তাদের দলের কোনো ক্ষতি হবে না।