সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
লালপুর প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহারুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী আওয়ামী লীগ নেতা মনজুর রহমান মঞ্জুকে (৪৫) গোপালপুর পৌর এলাকার আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে একটি কনফেকশনারী দোকানের সামনে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। মঞ্জু’র চোয়াল ও মাথায় ১টি করে এবং পেটে ২ রাউন্ড গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ময়না তদন্তের সময় মাথা ও পেটে আটকে থাকা ৪ রাউন্ড গুলি বের করা হয়।
মঞ্জু গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের সিবিএ’র সাবেক সহসভাপতি ছিলেন। তিনি সুগার মিলে মৌসুমী ক্রয় করনিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বাহদিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান ওরফে মনুর ছেলে।
এ হত্যার ঘটনায় ২০১৮ সালে হত্যাকান্ডের শিকার যুবলীগ নেতা জাহারুল ইসলামের ছেলে জাহিদ, ছোট ভাই রেজাউল, ভাতিজা আল আমিন সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলে লালপুর থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ওই দিনই লিটন, সুমন, রবিউল ও তমাল নামের ৪ আসামীকে গ্রেফতার করেছে।
লিটন গোপালপুর পৌর এলাকার শিবপুর গ্রামের মোজ্ফ্ফর হোসেনের ছেলে সুমন বিরোপাড়া গ্রামের মৃত পিয়ার আলীর ছেলে, তমাল কলেজ পাড়ার আব্দুল খালেকের ছেলে ও রবিউল কেবিনপাড়ার আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে। গ্রেফতারকৃতরা সকলেই এজাহারভুক্ত আসামী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে গোপালপুর বাজারের রবিউল ইসলামের কনফেকশনারীর দোকানে বসেছিলেন এসময় ৪/৫ জন মুখোশধারী তার ওপর হামলা চালিয়ে মাথায় ও পেটে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। রাতেই পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ইত্তেফাককে জানান, হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটনের জন্য আমরা কাজ করছি। তিনি জানান, মঞ্জুর এর চোয়াল ও মাথায় ১টি করে এবং পেটে ২ রাউন্ড গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা। ময়না তদন্তের সময় মাথা ও পেটে আটকে থাকা গুলি ৪ রাউন্ড বের করা হয়। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে মুখোশধারী দুইজন অস্ত্রধারী মাথা ও পেটে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি চালায়।
মামলার বাদী নিহতের বড়ভাই গোপালপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কমিশনার মাসুদ রানা জানান, ‘পুর্ব বিরোধের জেরধরে আমার ছোট ভাই মঞ্জুরকে গোপালপুর পৌর এলাকার টুমন ও তার সহযোগীরা গুলি করে হত্যা করেছে।’ এ ঘটনায় গোপালপুর পৌর এলাকার টুমন সহ ১৬ জনকে আসামি করে লালপুর থানায় মামলা করেছি।
বুধবার রাত ৯ টায় নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল মসজিদ মাঠে নিহত মনজুর রহমানের জানাজা শেষে বাহাদীপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
লালপুর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ জানান, পুর্ব বিরোধের জের ধরে এঘটনা ঘটতে পারে। মঞ্জুরের লাশ ময়না তদন্ত শেষে বুধবার রাতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি আরো জানান ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর গোপালপুর পৌর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহারুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছিলেন মনজুর রহমান মঞ্জু। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ২ নং গেট এলাকায় সকাল ১০ টার দিকে জাহারুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এদিকে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের মৌসুমী ক্রয় করনিক ও সিবিএ নেতা মনজুর রহমান মঞ্জু হত্যাকান্ডের ঘটনায় গোপালপুর শহীদ মিনার চত্ত্বরে পুর্বনির্ধারিত মহান মে দিবসের কর্মসূচি বাতিল করে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন।
মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন পিন্টু মে দিবসের কর্মসূচি বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন ‘আমরা শুধু মাত্র শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন অফিসে পতাকা উত্তোলন করেছি।