সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে শিক্ষার্থীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুরে কাশিয়াডাঙ্গা থানার হাড়ুপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে এক জনের নাম বাপ্পি হোসেন (১৫)। সে মহানগরীর সায়েরগাছা এলাকার বাবু হোসেনের ছেলে। অন্যজনের নাম মনির হোসেন (২০)। তিনি একই এলাকার শাহীন হোসেনের ছেলে। এরমধ্যে বাপ্পি হোসেন রাজশাহী কোর্ট একাডেমি স্কুল থেকে চলতি বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এছাড়া মনির হোসেন পেশায় একজন থাই মিস্ত্রি ছিলেন।
নিহদের চাচাতো ভাই আল আমিন বলেন, যেখানে তারা ডুবেছে সেখানে স্রোত ছিল না। বাড়িতে বলে এসেছে তারা নদীতে সাঁতার শিখতে যাবে। মনির ও বাপ্পির মধ্যে বাপ্পি সাঁতার জানতো না। তাই তাকে সাঁতার শেখানোর জন্য মনির পদ্মা নদীতে নিয়ে আসেন। নদীতে নেমে সাঁতারের একপর্যায়ে তারা কোনোভাবে ডুবে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবরিরা এসে অভিযান চালিয়ে প্রথমে বাপ্পি ও পরে মনিরের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহ দুটি বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা জানান, রোববার দুপুরে কয়েকজন একসঙ্গে নদীতে গোসল করতে নামেন। এ সময় বাপ্পি ও মনির হোসেন নদীতে ডুবে যান। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে ডুবুরি ইউনিট গিয়ে অভিযান চালিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দুইজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
রাজশাহী মহানগর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুপুরে কয়েকজন একসঙ্গে নদীতে গোসল করতে নেমে ডুবে গিয়ে এই অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ইউনিটের সদস্যরা নদীতে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তারা ঘটনাস্থলের অদূরেই নদীর তলদেশ থেকে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে মরদেহ দুটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে স্বজনদের কাছে দুজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এই ঘটনায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এই দুইজনের মৃত্যুসহ গত ছয় দিনের ব্যবধানে পদ্মা নদীতে ডুবে পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া দুইজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের মধ্যে শনিবার রাজশাহীর সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘায় ডিঙি নৌকা ডুবে আসাদ হোসেন নামে এক কিশোর নিখোঁজ হয়েছে। এখনো সে নিখোঁজ রয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাঘার পদ্মা নদীর মুশিদপুর এলাকার খেয়াঘাটের অদূরে ডুবে মারা যায় উপজেলার খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ১০ বছরের ছেলে সিয়াম হোসেন সজীব।
এর আগে গত ১৪ এপ্রিল মানিকের চর এলাকার পদ্মায় গোসল করতে নেমে ৮ বছরের শিশু জান্নাত খাতুন ও ১২ বছর বয়সী ঝিলিক খাতুন নিখোঁজ হয়। পরদিন সোমবার জান্নাত খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করা গেলেও ঝিলিক খাতুন এখনো নিখোঁজ আছে। জান্নাত কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বাংলাবাজার চর এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম মণ্ডলের মেয়ে। আর ঝিলিক চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পাটগ্রামের মনির হোসেনের মেয়ে। জান্নাত খাতুন ও ঝিলিক খাতুন ফুফাতো-মামাতো বোন। তারা মানিকের চরের আবদুল মান্নানের মেয়ে হালিমা খাতুনের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে পদ্মায় গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়।