মঙ্গলবার, ১২ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: রোজার চতুর্থ দিনেও বাজারে কমেনি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উত্তাপ। মাছ-মাংস থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্যেই যে উত্তাপ ছড়াচ্ছে বাজারে। মাংসের বাজারে বয়লার মুরগির দামও ২৪০ টাকায় ঠেকেছে।
রোজার বাজারে ক্রেতাদের স্বস্তি নেই মুরগির মাংস ও মাছের দামেও। এদিকে দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া থাকলেও নিরুপায় বলছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার সকালে রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে মাছ-মাংসের এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গরিব-মধ্যবিত্তের বয়লার মুরগিও এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। রোজার আগে যে মুরগির দাম ১৮০ টাকা কেজি ছিল তা এখন ২৪০ টাকায় ঠেকেছে।
সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কয়েকদিন আগেও ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার মুরগি খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়।
বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, সোনালী মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।
বাজারে কম দামি মাছের তালিকায় আছে পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া, যেগুলো সাধারণত ২০০ টাকার নিচেই পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমান বাজারে পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
যা তিন দিন আগেও ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা দরে, যা দুই দিন আগে ২০০-২১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল।
আকারভেদে রুই, কাতল কেজিতে ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মৃগেল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, শোল ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, চাষের কই ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে দাম বাড়ার তালিকায় আছে ইলিশও। আকারভেদে জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকা কেজি দরে। ক্রেতারা বলছেন, দুই দিন আগেও যে মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনেছেন আজ তা ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, রোজা ঘিরে কয়েকদিন আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন সেটা অসহনীয় পর্যায়ে আছে। বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। যে যার খুশিমতো দাম বাড়াচ্ছে।
বাজারে যাই ধরি, সেটারই দাম বেশি। সবকিছুর দাম বেশি। চার-পাঁচদিন আগেও মুরগির মাংস ছিল ১৮০ টাকা, কিন্তু রোজার কারণে দাম বেড়ে এখন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা।
নগরীর সাধুর মোড় এলাকার বেসরকারি চাকুরিজীবী মিলন বলেন, দিনদিন মাছ-মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে দেখছি মাছের বাজার চড়া। যে কারণে কিনতে গেলেও বারবার হিসেব করতে হয়। এখন আর আগের মতো প্রতি সপ্তাহেই গরুর মাংস কেনা যায় না।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই রোজা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে বিশার মূল্য ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশই বোধহয় একমাত্র দেশ, যেখানে ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতা করে দাম বাড়ায়। এটা আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্য।
মাছ কিনতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন, ছোটখাটো ব্যবসা করি, বাজারে আসলে নিজেকে খুবই অসহায় মনে হয়। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, কোথায় গিয়ে ঠেকে বলা মুশকিল। কিন্তু সবকিছুর দাম বাড়লেও আমাদের আয়-রোজগার তো ঠিকই আগের মতোই আছে।