শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁ: নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের ইলশাবাড়ি এলাকায় কম দামে ইট দেওয়ার কথা বলে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা নিয়ে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ইটভাটা মালিক সবেদুল ইসলাম ওরফে রনির বিচারসহ পাওনা টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইলশাবাড়ি-চন্ডিপুর গ্রামের ভুক্তভোগীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে নওগাঁ-রাণীনগর সড়কের ইলশাবাড়ির সুরমা ব্রিকস নামের ইটভাটা খলায় ভুক্তভোগী জনসাধারন ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ইলশাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ভুক্তভোগী বেদারুল ইসলাম, চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. আলতাফ হোসেন, সদর উপজেলার মাদারমোল্লা খিদিরপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, ইলশাবাড়ী গ্রামের মোশাররফ হোসেন, বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার তারাপুর গ্রামের তপেস কুমার।
ভুক্তভোগিরা জানান, বছরের কিছু সময় ইটের দাম বেড়ে যায়। অন্যান্য সময়ে কম দামে ইট পাওয়া যায়। ভাটা কর্তৃপক্ষকে অগ্রিম টাকা দিলে প্রতি হাজার ইটে দুই-তিন হাজার টাকা কম পড়ে। ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে বিভিন্ন সময়ে কম দামে ইট পাওয়ার চুক্তিতে সদর উপজেলার ইলশাবাড়ী এলাকায় পাশাপাশি অবস্থিত সুরমা ব্রিকস-১ ও সুরমা ব্রিকস-২ নামের দুটি ইটভাটার মালিক সবেদুল ইসলামকে ভুক্তভোগিরা অগ্রিম টাকা দেন। টাকা লেনদেনের রসিদ তাদের কাছে রয়েছে।
কিন্তু নানা অজুহাতে নির্ধারিত সময়ে তাদেরকে ইট দেওয়া হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে ইট না পাওয়ায় অগ্রিম দেওয়া টাকা ফেরত চেয়ে বারবার ধরনা দিয়েও ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেয়না সবেদুল ইসলাম। গত দুইমাস ধরে সদর উপজেলার ইলশাবাড়ী এলাকায় অবস্থিত সুরমা ব্রিকস-১ ও সুরমা ব্রিকস-২ টাকা ফেরত না দেওয়ায় অনেকে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছেন।
ইলশাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, আমি সুরমা ব্রিকস-১ ইটভাটা থেকে ৫৫ হাজার ৬০০ ইট কেনার জন্য সবেদুল ইসলাম রনিকে ৫ লাখ ৪ হাজার টাকা অগ্রিম দেই। গত বছরের ১ অক্টোবর এই টাকা দেই। চুক্তি অনুযায়ী ১ বছরের মধ্যে সব ইট দেওয়ার কথা। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত একটি ইটও পাইনি।
গত দুইমাস ধরে ভাটা মালিক ও ম্যানেজার সবাই উধাও। ভাটার উৎপাদন কার্যক্রম। আমার মতো অগ্রিম টাকা দেওয়া অন্য পাওনাদাররা ভাটায় এসে মালিক কর্তৃপক্ষের কাউকে পাচ্ছে না। ইটভাটা মালিক সবেদুল ইসলাম ও তাঁর ম্যানেজার সবার ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
সবেদুল ইসলাম নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার পাটিচরা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। সুরমা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে তার মালিকানাধীন একটি সমবায় সমিতিও রয়েছে। সেই সমিতির অনেক শাখাও বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক স্থানে অর্থ ফেরতের দাবীতে সমিতির কার্যালয়ও ঘেরাও করার ঘটনাও ঘটেছে।
এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে আমরা জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিন শীষ জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।