বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। বাধাহীন পরিবেশে মোটামুটি উৎসবের আমেজে ভোট হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় ভোটার উপস্থিতি কম ছিল প্রায় সারা দেশেই। ভোট দেওয়ার পর অল্প উপস্থিতির মধ্যেই আনন্দ ভাগাভাগি করতে নিজেরাই নানাভাবে ছবি তুলেছেন মোবাইল ক্যামেরায়।
ভোট দেওয়ার পর তরুণ ভোটাররা জানালেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো ফিল আসছে না। অথচ জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আনন্দ উৎসব হওয়ার কথা ছিল। প্রার্থীরা আয়োজন যা করেছেন তাতে উৎসব মনে হলেও ভোটকেন্দ্রে এসে দেখা গেলো, আনন্দ কম। রবিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন চলাকালে মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদী হাউজিং প্রধান সড়কের গ্রীন উড স্কুল কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে দুর্জয় বিপ্লব ও শাশ্বতী বিপ্লব জানান তারা ভোট দিয়েছেন মাইলস্টোন কেন্দ্রে। ভোট দেওয়ার পর নাসরিন আক্তার, নাহিদা ইসলাম, আশরাফ আরজকে নিয়ে মোট পাঁচ জন মোহাম্মদী হাউজিং প্রধান সড়কে ছবি তুলছেন।
দুর্জয় বিপ্লব বলেন, আমি খুবই আনন্দিত ভোট দিতে পেরে। আমরা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছি একই কেন্দ্রে এবং ভোট দিতে আমাদের সবসময় ভালো লাগে। অবশ্যই ভোটার উপস্থিতি আরও বেশি হলে আরও ভালো লাগতো। যদি সব রাজনৈতিক দল অংশ নিতো তাহলে আরও ভালো হতো। কিন্তু তারপরেও নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি ভোট দেওয়া আমার নাগরিক দায়িত্ব। তাই আমি ভোট দিতে এসেছি।
ভোট দেওয়ার পর শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ভোটার উপস্থিতি ভলো হলে ভালো লাগতো। তবু আমরা আনন্দ করছি। জামিয়া ইসলামী মোহাম্মদী আশরাফফুল মাদারিস ও এতিম খানা ভোট কেন্দ্রে প্রথম জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন খ্রিস্টিনা রোজার ও মার্সিয়া রোজার। তারা বলেন, আমরা জাতীয় নির্বাচনে প্রথম ভোট দিলাম। এর আগে সিটি করপোরেশন নির্বোচনে ভোট দিয়েছি। সেখানে উৎসব বেশি ছিল। এই নির্বাচনে উৎসব ফিল হচ্ছে না। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে ভোটার উপস্থিতি ছিল তাও নেই।
ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটাদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, আয়োজন সব ঠিক আছে। আয়োজনেই উৎসব। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় ভোটারদের মনের মধ্যে উৎসব নেই। সব দল নির্বচানে অংশ নিলে ভোটার উপস্থিতি বেশি হলে আনন্দ বেশি হতো। এখন আনন্দ কম।
মোহাম্মদপুরের বাদশা ফয়সাল ইনস্টিটিউটের ৪৮ নম্বর কেন্দ্রে বেলা ২টার পর দেখা গেছে ভোটার উপস্থিতি কম। প্রিসাইডিং অফিসার জহিরুল হক জানান, কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৬৯৫ জন। বেলা দুইটা পর্যন্ত ৪৫১টি ভোট পড়ে। সেই হিসেবে ১৬.৭৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাদশা ফয়সাল ইনস্টিটিউট অপর কেন্দ্রের মোট ভোটার ৩ হাজার ২৫৯টি। বেলা ২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৬৬৪টি। প্রিসাইডিং অফিসার বিজয় কুমার হালদার বলেন, বেলা ২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ৬৬৪ জন ভোট দিয়েছেন। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বিঘ্নে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদী হাউজিং লিমিটেড এলাকার গ্রীন উড স্কুল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার প্রসেনজিৎ কুমার পাল বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ১৩ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ভোট চলাকালে ঢাকা-১৩ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটারের উপস্থিতি কম। সকালে নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নাকক সাংবাদিকদের জানান, বাদশা ফয়সাল ইনস্টিটিউটের কেন্দ্রে ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হবে। তবে ভোট শেষ হওয়ার আগে প্রিসাইডিং অফিসার ও ভোট গ্রহণ সংশ্লিষ্ট জানিয়েছেন ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। ভোট সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলেছেন ৩০ শতাংশ ভোট হলেই আমরা খুশি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টায় ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।