বুধবার, ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পুঠিয়ায় তিন ফসলি কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকার কৃষকেরা। শনিবার বিকেলে উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের মঙ্গলপাড়া গড়াগাছীর মাঠে এলাকার দুই শতাধিক কৃষকের অংশগ্রহণে ওই মানববন্ধন হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে কয়েকজন প্রভাবশালী মৎস্যচাষি এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে প্রথমে ফসলি জমি নিচ্ছেন। পরে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সেই জমিতে পুকুর খনন করা হয়। প্রভাবশালী মহলটি সেখানে খনন করা পুকুরগুলো মাছ চাষের জন্য লিজ নিয়ে আর্থিকভাবে ব্যাপক লাভবান হচ্ছে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কৃষক আব্দুল গাফফার বলেন, এই বিলে প্রায় ২০০ একর ফসলি জমি রয়েছে। ওই জমিতে চাষাবাদ করে হাজারো কৃষকের সংসার চলে। কিন্তু এলাকার কিছু প্রভাবশালী মৎস্যচাষি বিগত কয়েক বছরে বিলের বেশির ভাগ জমিতে পুকুর খনন করেছে। ফলে এখন বছরের বেশির ভাগ সময় এসব বিলে জলাবদ্ধতা থাকে। তাতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এর মধ্যে এবার আবারও প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে পুকুর খননের কাজ শুরু করা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে কয়েক দফা জানিয়েও কোনো সুফল মেলেনি। যে কারণে চাষিরা ফসলি খেত রক্ষায় বিলে মানববন্ধনের আয়োজন করেছেন।
কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, পুকুর খনন করতে গত ৩০ নভেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই মাঠে দুটি মেশিন নামানো হয়। তখন এলাকাবাসী বাধা দেয়। এ কারণে ওই প্রভাবশালীরা প্রতিবাদকারীদের নামে থানায় মিথ্যা চাঁদা দাবির অভিযোগ দেয়। তিনি বলেন, পুকুর খননকারীরা প্রভাবশালী। তারা এলাকার রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফসলি খেত খনন করছে। তিনি শিগগির তা বন্ধের দাবি জানান।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন আবুল বাসার, জহুরুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, সলেমান মণ্ডল, মফিজ উদ্দিন, আনিছুর রহমান, রফিক মোল্লা প্রমুখ।
শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, এলাকার ফসলি খেত রক্ষায় বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করা হচ্ছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে খননকাজ বন্ধ হচ্ছে না। তিনি বলেন, সম্প্রতি এই এলাকায় পুকুর খননকাজ বন্ধ করতে দুটি মেশিন জব্দ করা হয়েছে।
তবে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, পুকুর খননকারীদের কাছ থেকে পুলিশ কোনো সুযোগ-সুবিধা নেয় না। আর কোনো পুলিশ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত কিনা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, ফসলি কৃষিজমিতে কোনোভাবেই পুকুর খনন করতে দেওয়া হবে না। কেউ পুকুর খননের প্রস্তুতি নিয়ে থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।