মঙ্গলবার, ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
গোমস্তাপুর প্রতিনিধি:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর সোমবার থেকেই মাঠে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। পোস্টের পোস্টারে ছেয়ে গেছে জনপদ। চলছে মাইকিং, জনসংযোগ ও পথসভা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল – গোমস্তাপুর- ভোলাহাট) আসনে মোট ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।এরমধ্যে দলের মনোনয়ন ও প্রতিদ্বন্দীতা নিয়ে সাবেক সাংসদ গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস ও বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমানের পুরনো দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। এর উত্তাপ নির্বাচনে পড়বে বলে অনেকে মনে করছেন। এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান ও দশম সংসদের সাবেক সাংসদ ও গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস ।
সম্প্রতি দুই এমপির পছন্দের দুই নেতাকে পাল্টাপাল্টি গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া নিয়ে নতুন করে এ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। এছাড়া, দুপক্ষের আলাদা আলাদা- আলাদা দলীয় অফিস কোন্দলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তারা জানান, সাবেক সাংসদ ও গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় এবং প্রচার-প্রচারনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ায় দলের সাংগঠনিক কাজ চালানোর জন্য গত ৪ ডিসেম্বর তার স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর সহ- সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ ফিটুকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন। এ ঘটনায় গত বুধবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির পাল্টা সভা আহবান করে ৪ নম্বর সহ-সভাপতি আজাহার আলী মন্ডলকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন।
এ বিষয়ে তিনি জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করায় দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডেকে ৪০ জন সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে আজাহার আলী মন্ডলকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়।এছাড়া সভাপতি মহোদয় আমাদের কিছু না জানিয়ে ফিটুকে একক ভাবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন আমার অনুমতি ছাড়া গত বুধবার দলীয় কার্যালয় ছেড়ে অন্যত্র যে সভা করছেন তা অবৈধ। তিনি আমার অনুমতি ছাড়া কোন সভা আহবান করতে পারেন না। এছাড়া আমি যে কাউকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিতেই পারি। এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের দুই জন প্রার্থী মূল প্রতিদ্বন্দী হওয়ায় নেতা- কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।নির্বাচনে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তারা।
এছাড়া, বিভিন্ন নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাল্টা পাল্টি অভিযোগ তো রয়েছেই।দলে প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুজনের দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। এদিকে নির্বাচনী প্রচারনা শুরু পর থেকেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের নির্বাচনী আচরন বিধি লংঘনের একাধিক অভিযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন। এ আসনে অন্য তিন প্রার্থীরা হলেন, বিএনএফের আজিজুর রহমান( টেলিভিশন), জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) আব্দুর রশিদ ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের (ডাব) আব্দুল্লাহ আল মামুন।
সানশাইন/সোহরাব