বুধবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: বৈশ্বিক জলবায়ুর আঞ্চলিক অভিঘাত ও নেতিবাচক প্রভাবে বাংলাদেশ যেমন অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনি বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত বরেন্দ্র অঞ্চলও ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে যেমন অস্বাভাবিক খরা, তীব্র তাপদহ বেড়েছে। তেমনি হঠাৎ বা অসময়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে অস্বাভাবিকতাও বেড়েছে।
বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্স এ আয়োজিত নগরীর প্রান্তিক মানুষের জন্য জলবায়ু ন্যায্যতায় করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় এবং আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিক্ষকসহ অংশগ্রহণকারীগণ বলেন, এবার অসময়ে অতিবৃষ্টি কৃষকের হাজার হাজার একরের সবজি শস্য ফসল নষ্ট করেছে। অন্যদিকে কিছু দিন আগেও বর্ষার সময়ে তীব্র খরা আর অনাবৃষ্টির কারনেও কৃষক ক্ষীতগ্রস্ত হচ্ছে।
দিনে দিনে বরেন্দ্র অঞ্চলের আবহাওয়া অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে সহায়তা দেবার দাবি করেন ধনী দেশগুলোর প্রতি।
মতবিনিময় ও আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য তুলে ধরেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বর্তমান নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র দাস।
তিনি বলেন, জলবায়ু পবির্তনে বাংলাদেশ যেমন সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি এর প্রভাব কিছু অঞ্চলে অনেক বেশি পড়ছে। যার মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চলও একটি।
এখানে তাপদহ, অনাবৃষ্টি এবং অসময়ে অতিবৃষ্টি বেড়েছে। যা নগর জীবনসহ গ্রামীণ জীবনে আমাদের কষ্ট বাড়িয়ে তুলেছে। রোগবালাই বেড়েছে, আবার আমাদের কৃষকের ফস্য ফসল নষ্টসহ ফসল ফলাতে কৃষক বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফারহাত তাসনিম বলেন, জলবায়ু পরির্বতন একটা দুর্যোগ হিসেবে দেখা দিচ্ছে আমাদের মাঝে। আমাদের এই ক্ষতির জন্য সব থেকে বেশি দায়ী ধনী দেশগুলো।
তাদের উচিত আমাদের এই ক্ষতিপূরণ দেয়া। তিনি আরো বলেন বৃষ্টিতে শহরের বস্তিগুলো তলিয়ে যায়, নারী শিশুদের সব থেকে বেশি কষ্ট হয়। এগুলো সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলতান মাহমুদ, হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. রোকসানা বেগম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যুব সংগঠন নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো: মাহিন হোসাইনসহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।
উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যুব সংগঠন নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজে এ মতবিনিময় এবং আলোচনা অনুষ্টানের উপস্থাপনাপত্র তুলে ধরেন বারসিক এর গবেষক শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন- জলবায়ু পরিবর্তনে যে ক্ষতির শিকার হচ্ছে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলগুলো, সেই পরিমাণে ক্ষতিপূরণের অর্থ দিচ্ছেনা বাংলাদেশকে।
তিনি জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে ধনী দেশুগলোর প্রতিশ্রুত অর্থ বাংলাদেশকে দেবার দাবি জানান। জলবায়ু তহবিলের নামে এখন বহুজাতিক বড় বড় পশ্চিমা কোম্পানিগুলো ঢুকে পড়েছে, যারা ঋণের জালে আটকানোর একটা কৌশল করছে। যা আরও ক্ষতিকর হতে পারে।