রবিবার, ১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, তানোর: রাজশাহী তানোরে টানা তাপদাহের পর হঠাৎ ভারি বৃষ্টিতে অধিকাংশ পুকুরে গ্যাস ও অক্সিজেন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে উপজেলার অধিকাংশ পুুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে এতে মাছ চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিনের টানা তীব্র গরমের পর হঠাৎ বৃষ্টিতেও মাছ মারা যাচ্ছে। এছাড়াও অধিকাংশ পুকুরে এয়ারেটর (পানিতে অক্সিজেন সরবরাহের যন্ত্র) না থাকায় অক্সিজেনের যোগান দিতে পারছে না। এসব পুকুরে ঠান্ডা পানি সরবরাহেরও কোনো ব্যবস্থা নাই। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য এখন আমাদের কাছে নেয়।
তবে সংকট মোকাবিলায় নিয়মিত চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পুকুরে মাছের মড়ক শুরু হয়েছে। এরমধ্যে উপজেরার মুন্ডুমালা, তানোর পৌর এলাকা, বাধাইড় ও কামারগাঁ ইউনিয়নের বেশি চাষিরা অফিসে এসেছে। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মাছ মরে যাবার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার তানোর গোল্লাপাড়া বাজারের আড়ত ব্যবসায়ী আমজেদ হোসেন বলেন, গত সোমবার থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পুরের মাছ মরে ভেসে উঠতে শুরু করে। আড়তে মাছে আমদানী বেড়ে গেছে। আমার আড়তে গত মঙ্গলবার দুই টন মাছ বিক্রি হয়েছে।
তানোর থেকে যাওয়া মাছ কেশোর হাটের আড়তগুলোরে প্রায় ৬ থেকে ৭ টন মাছ বিক্রি হয়েছে। আমার ও আমার ছেলের ১৫টি পুকুর রয়েছে। সব পুকুরে একই অবস্থা। মাছের দাম কম। আগে সিলভার কাপ ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এখন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এখন ২০০ থেকে ২৩০টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি হয়েছে। গত কয়েনদিন থেকে মাছের দাম নেই। কার মাছ কে কিনে। মাছ চাষিরা ক্ষতির শিকার হয়েছে।
তানোর পৌর সভার কুঠিপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম, ফটিক, আব্দুর রশিদ বলেন, পুকুরে অক্সিজেন সংকটের কারনে মাছ মারা যাচ্ছে। একই অবস্থার কথা বলেন, আমশো গ্রামের তুষার, মুন্ডমালা পৌরসভার করিমপুর গ্রামের জুয়েল রানা, হাসনাপাড়া গ্রামের মাসুদ, পাঁচন্দর ইউনিয়নের মোকছেদ, বনকেশর গ্রামের আব্দুল বারি, শরিফুল ইসলাম ও কামারগাঁ ইউনিয়নের তোফাজ্জল হোসে, কন্দপুর গ্রামের এনামুল, কাফি, বংপুর গ্রামের রফ, তানোরের ইয়াকুব-নওশাদ, রইস, কৃষ্ণপুরের ইব্রাহিম, জুয়েল কাজী, পাঠাকাটার ইয়াকুব, কোয়েলহাটের মুকুল-বকুল, হরিশপুরের সারোয়ার ও ধানতৈড়ের জুয়েলসহ অনেক মাছ চাষির পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
তানোর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাবুল হোসেন জানান, প্রচন্ড খরায় পানি স্বল্পতা আর তাপমাত্রা বাড়ায় পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়ায় মাছ মরে যাচ্ছে।
এছাড়া অতিরিক্ত তাপদাহের পর হঠাৎ ভারী বৃষ্টি নামায় তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেও মাছ মারা যাচ্ছে। আমরা মাছ চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবে চাষিরা।