কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরা

নুরুজ্জামান, বাঘা: বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ ভূমিকা ও সাহসী পদক্ষেপের কারণে পুর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন নারীরা নানামুখি কর্মক্ষেত্র সহ রাজনীতিতে অনেক বেশি এগিয়ে এসেছে। আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠা করার পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে, জাতির ভবিষ্যৎ ও উন্নয়ন অনেকাংশেই নির্ভর করছে নারীর ক্ষমতায়নের উপর। যার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। এখানে আওয়ামী লীগের যতোগুলো সহযোগী সংগঠন রয়েছে তারমধ্যে পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন মহিলা (শিক্ষার্থী) ছাত্রলীগ সহ যুব মহিলা লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অনেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পৃথিবীর উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশের কৃষি, ক্ষুদ্র কুঠির শিল্প ও গার্মেন্টস থেকে শুরু করে সকল সেক্টর যেমন প্রশাসন ক্যাডার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পাইলট, নারী স্পিকার, নারী প্রধানমন্ত্রী এমনকি জুডিশিয়ালের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিচারের জায়গায় দায়িত্ব¡ পালন করে বর্তমানে অবদান রাখছেন নারীরা। দেশের সর্বত্র পুরুষের পাশা-পাশি এখন নারীরা দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বাংলাদেশের নারীরা সুনাম অর্জন করেছেন।
বাঘার একজন স্কুল শিক্ষক বলেন, স্কুলে পড়ার সময় মতিয়া চৌধুরী এবং বেগম রোকেয়া নাম শুনেছিলাম। এরমধ্যে মতিয়া চৌধুরীকে অগ্নিকন্যা ডাকা হতো। অপর দিকে নারী শিক্ষার প্রসার বৃদ্ধিতে বেগম রোকেয়ার ছিলো অনন্য অবদান। এদিক থেকে নারীদের কর্মক্ষেত্র ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অতীতের তুলনায় বর্তমানে রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ব্যাপক বেড়েছে। সভা, সমাবেশ ও মিছিলে পুরুষদের সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন নারীরাও। যেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি সেখানেই মিলছে নারীদের উপস্থিতি। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পারদর্শিতা এবং প্রজ্ঞা দেখে অনেকে যুক্ত হচ্ছেন রাজনীতিতে। এমনটি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেত্রী-কর্মী ও স্থানীয় সুশীল সমাজ।
তাদের ভাষ্য মতে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশে উন্নয়নের জোয়ার শুরু হয়। নারীদের উন্নয়নের অংশীদার করতে সব ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য দিচ্ছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছেন তিনি। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারীদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূল রাজনীতিতে তারা আরও বেশি সক্রিয় হচ্ছেন।
বাঘা উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা খাতুন লতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারীদের জন্য কাজ করছেন। আমরা তার অনুপ্রেরণা নিয়ে রাজনীতি করছি। তার কাছ থেকে আমরা অনেক ভরসা পাচ্ছি। তিনি রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশের নাম ফুটিয়ে তুলেছেন।
শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী তৃণমুল থেকে শুরু করে জাতীয় সাংসদ পর্যন্ত নারীদের নিয়ে কাজ করছেন। এখন নারীরা জয়ীতা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ঋণ সহায়তা পাচ্ছে। একই সাথে নানা প্রকার ট্রেনিং দেয়ার মধ্যমে তারা কর্মমুখী হচ্ছে, এ গুলো সবই তাঁর অবদান। যে কারণে এখন কোন সভা সেমিনার হলে নারীদের স্বতঃস্ফুর্ত সাড়া পাওয়া যায়।
বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবার ক্ষমতায় এলে নারীর অধিকার আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি চারঘাট-বাঘা থেকে তিনবারের নির্বাচিত স্থানীয় সাংসদ ও দুই বারের সফল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নাম উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মন্ত্রী অনেক ভালো মানুষ। তার উন্নয়নের ছোয়া দুই উপজেলার সর্বত্র। তিনি পুরুষদের পাশা-পাশি নারীদের অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এ কারণে তার যে কোন প্রোগ্রামে নারীদের ব্যাপক উপস্থিতি ঘটে।
জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদে ৪৮ সদস্যের মধ্যে পাঁচজন নারী। জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত সদস্য ২১ জন এবং সংরক্ষিত ৫০ জন নারী। এর বাইরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বর্তমান ৮১ সদস্যের কমিটিতে সভাপতি সহ ২০ জন নারী সদস্য রয়েছেন। যা শতকরা ২৪.৬৯ শতাংশ। তবে, দলটির সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ সহ হিসাব করলে সেটি আরো বাড়বে।
বাঘার সুশীল সমাজের মতে, নারী নেতৃত্ব রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য সচেষ্ট রয়েছে। সমাজের অসহায়, নির্যাতিতা, তালাকপ্রাপ্তা, দুস্থ ও গর্ভবতী নারীদের পাশে থেকে তাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নারী নেতৃত্ব সহযোগিতা করে যাচ্ছে।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩ | সময়: ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর