শনিবার, ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: শুরুটা কী দুর্দান্তই না হয়েছিল নিউ জিল্যান্ডের। প্রথম ওভারে তিন ছক্কা! এরপর যেন টিম সাউদির দল ছুটল উল্টো পথে। দারুণ বোলিংয়ে তাদের দেড়শর নিচেই থামিয়ে দিল ইংল্যান্ড। দাভিদ মালানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সেই রান অনায়াসেই পেরিয়ে গেল টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
চেস্টার-লি-স্ট্রিটে বুধবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে জিতেছে জস বাটলারের দল। ১৩৯ রানের লক্ষ্য ৩৬ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে চার ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। অভিষেকে আলো ছড়ানো ব্রাইডন কার্স ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেওয়া এই পেসারই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। খরুচে শুরুর পর ৩৭ রানে তিন উইকেট নেন লুক উড। সফরকারীদের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের তিনজনকে বিদায় করে তিনিই।
নিউ জিল্যান্ডের ইনিংসে একটি জুটিও ছুঁতে পারেনি ৩০ রান। কোনো জুটি খেলতে পারেনি ২৪ বল। মিডল অর্ডারে কিছুটা লড়াই করেন গ্লেন ফিলিপস। তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি আর কেউ। রান তাড়ায় ইংল্যান্ডকে পথ দেখান মালান। দুই ছক্কা ও পাঁচ চারে ৪২ বলে এই বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান করেন ৫৪ রান।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে নিউ জিল্যান্ড। উডের প্রথম ওভারে টানা তিনটি ছক্কা মারনে ফিন অ্যালেন! পরের ওভারে ওই রানেই ফিরে যেতে পারতেন তিনি। ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি স্যাম কারান। চতুর্থ ওভারে কনওয়েকে ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন উড। ১৮ রানে জীবন পাওয়া অ্যালেন কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। কার্সের দারুণ ডেলিভারিতে ফিরে যান বোল্ড হয়ে।
ষষ্ঠ ওভারে ফিরে টিম সাইফার্টকেও বোল্ড করে দেন উড। প্রথম ওভারে ১৮ রান নেওয়ার পরও পাওয়ার প্লেতে নিউ জিল্যান্ড ৩ উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে কেবল ৩৮ রান। ফিলিপস ছাড়া টিকতে পারেননি মিডল অর্ডারের আর কোনো ব্যাটসম্যান। দ্রুত ফেরেন মার্ক চ্যাপম্যান, ড্যারিল মিচেল ও মিচেল স্যান্টনার। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় উডের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিলিপস।
শেষ দিকে অ্যাডাম মিল্ন, ইশ সোধি, সাউদিদের ছোট ছোট অবদানে ১৩৯ রান পর্যন্ত যায় নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ওভারে স্বাগতিকদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পরও এই রান নিয়ে খুব একটা লড়াই করতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। সাউদিকে চার মেরে শুরু করে, ওই রানেই ফেরেন জনি বেয়ারস্টো। এই উইকেটে সাকিব আল হাসানকে (১৪০) পেছনে ফেলে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীদের তালিকার চূড়ায় উঠলেন সাউদি (১৪১)।
মালানের দায়িত্বশীল ব্যাটিং আর উইল জ্যাকসের পাল্টা আক্রমণে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় ইংল্যান্ড। গতিময় পেসার লকি ফার্গুসনকে টানা দুই চারের পর ছক্কা ছক্কায় ওড়ান জ্যাকস। স্যান্টনারের পরের ওভারে টানা তিনটি চার মারেন মালান। তাদের জুটি পঞ্চাশ স্পর্শ করে ৩৩ বলে। বিপজ্জনক এই জুটি ভাঙেন সোধি। এই লেগ স্পিনারের আপাত সাদামাটা ডেলিভারিতে তুলে মেরে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েন জ্যাকস (১২ বলে ২২)। মালানের সঙ্গে ৩৮ বলে তিনি গড়েন ৫৭ রানের জুটি।
প্রথম ৬ বলে ২ রান করা হ্যারি ব্রুক ডানা মেলেন সোধিকে পরপর দুই বলে ছক্কা মেরে। দ্রুতই জমে যায় মালানের সঙ্গে তার জুটি। ২৯ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে তাদের জুটির রান। ৪০ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশিক্ষণ টেকেননি মালান। ফার্গুসনের বলে ক্যাচ দিয়ে থামেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। লিয়াম লিভিংস্টোনকে নিয়ে বাকিটা সারেন ব্রুক। ২৭ বলে তিন ছক্কা ও দুই চারে তিনি খেলেন ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। লেগ স্পিন ২৫ রানে ১ উইকেট নেওয়া লিভিংস্টোন ছক্কায় শেষ করেন ম্যাচ। শুক্রবার ম্যানচেস্টারে হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।