মঙ্গলবার, ৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ভারত সমর্থন দেবে বলে আশা করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে ভারত- সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবর নিয়ে শনিবার এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছে, তার সঙ্গে নয়া দিল্লি একমত নয় বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমে খবর এসেছে। এক কূটনৈতিক পত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে তা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষেই সুখকর হবে না।
সাংবাদিকরা এই সংবাদ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “আমরা পত্রিকায় দেখলাম, আজকে ডয়েচে ভেলের বরাত দিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট করা হয়েছেৃ এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। “এজন্য যে, আজকে বাংলাদেশে যে সংকট, সেই সংকটের মূলে হচ্ছে এই অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসন ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করবার যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্যটাই। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের মানুষের উপর যে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে রাষ্ট্রকে দিয়ে, বাংলাদেশে যে একটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস গড়ে তোলা হয়েছেৃবলা যেতে পারে যে, টোটালি একটা ডিপ স্টেট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশ, যারা গণতন্ত্রের কথা বলে সবসময়, তাদের কাছে এটা অপ্রত্যাশিত, যদি এই নিউজটা সত্যি হয়ে থাকে।”
ভারতের অবস্থান বাংলাদেশের জনগণের চাওয়ার বিপরীতে যাবে না- এই আশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা নিশ্চয় এটা আশা করব, ভারত বাংলাদেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দেবে। এই দেশে সত্যিকার অর্থেই সকল দলের অংশগ্রহণে, সকলের সদিচ্ছায় একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে তারা (ভারত) পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করবে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সহযোগী সংগঠনটির নেতাদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। “এই কথাটা আমরা কখনই বলতাম না, বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমরা দেখতে পারছি যদি নিউজটা সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে রাজনীতির আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তারা হস্তক্ষেপ করছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষের উপর আস্থা রাখি, তাদের শক্তির উপর আস্থা রাখি। আমি মনে করি, ভারত দেখবে বাংলাদেশের মানুষ কী চায়? বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি তারা (ভারত) কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এই অঞ্চলের মানুষের জন্যও সেটা শুভ হবে না।”
স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সকালে সহযোগী সংগঠনটির নেতাদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ফখরুল। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সংগঠনটির নেতা ইয়াসিন আলী, নাজমুল হাসান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা একথা খুব স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী দলের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নাই। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে দেখা গেছে, কখনই কোনো মৌলবাদী দল তারা ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বরঞ্চ তাদের যে শক্তি সেই শক্তি ক্ষীয়মান হয়ে এসেছে।” সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে এবং এখন বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে তারা একটা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
“এদেশের জনগণ আজকে এক হয়েছে, সমস্ত দলগুলো আজকে এক হয়েছে তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য তারা লড়াই শুরু করেছে। এই এক দফার লড়াইয়ে নিশ্চয় জনগণ জয়ী হবে বলে আমরা আশা করি।”